
রাশিয়া কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বোমাবর্ষণ চালানোর পর, ইউক্রেন দাবি করেছে যে তারা রাশিয়ার দুটি বিমানঘাঁটি, একটি তেল শোধনাগার এবং একটি প্রতিরক্ষা উৎপাদন কারখানায় পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার রাতে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে হামলা চালানোর পর শুক্রবার ইউক্রেন এই পাল্টা হামলার কথা জানায়। ওই হামলায় কিয়েভসহ একাধিক শহর লক্ষ্য করে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানান, এই রুশ হামলায় অন্তত চারজন নিহত এবং ডজনখানেক মানুষ আহত হয়েছে।
অন্যদিকে, যুদ্ধের মাঝেই তুরস্কে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সরাসরি শান্তি আলোচনা চললেও, দুই দেশ এক ধরনের সহিংসতার চক্রে আটকে পড়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়া প্রতিদিনই শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউক্রেন আক্রমণ করছে।
শুক্রবার ইউক্রেন জানায়, তারা রাশিয়ার মস্কোর কাছে ডিয়াগিলেভো বিমানঘাঁটি, সারাতোভ অঞ্চলের একটি বিমানঘাঁটি ও তেলের ডিপো, এবং তামবভ প্রদেশের একটি প্রতিরক্ষা কারখানাতে হামলা চালিয়েছে।
এর আগে, রবিবার ইউক্রেন রাশিয়ার পাঁচটি বিমানঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছিল, যাতে দেশটির দীর্ঘপাল্লার পরমাণু সক্ষম বোমারু বিমান ও নজরদারি বিমানগুলোর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ধ্বংস হয়।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে বৃহস্পতিবার রাতে রাশিয়ার চালানো সর্বশেষ হামলা সেই প্রতিক্রিয়ার অংশ কিনা, নাকি এটি তাদের নিয়মিত হামলারই একটি অংশ — তা এখনো পরিষ্কার নয়।
বোমারু বিমানঘাঁটি ও প্রতিরক্ষা কারখানায় হামলা
কিয়েভ পোস্ট জানায়, ইউক্রেন যে এঙ্গেলস বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে, সেটি ছিল রাশিয়ার বোমারু বিমানগুলোর ঘাঁটি।
যদিও ফরাসি বার্তা সংস্থা AFP বিমানগুলোর নির্দিষ্ট ধরন উল্লেখ করেনি, তবে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী বলেছে, “ওই ঘাঁটি ছিল শত্রু বিমানসমূহের কেন্দ্রবিন্দু”।
মস্কোর কাছে ডিয়াগিলেভো বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে রাশিয়ার জ্বালানি পূরণকারী ও এস্কর্ট বিমান রাখা হয় — যা ইউক্রেনে বিমান হামলায় সহায়তা করে।
সামরিক বাহিনী আরও জানায়, সারাতোভে অন্তত তিনটি জ্বালানি ও তেলের ট্যাঙ্ক ধ্বংস করা হয়েছে। ইউক্রেন সরকারের Center for Countering Disinformation–এর প্রধান আন্দ্রি কোভালেঙ্কো কিয়েভ পোস্টকে জানান, ইউক্রেনীয় ড্রোন এঙ্গেলসের তেলের ডিপো ও তামবভ প্রদেশের মিচুরিনস্কে অবস্থিত ‘প্রোগ্রেস’ প্রতিরক্ষা কারখানাতে হামলা চালিয়েছে।
কোভালেঙ্কো বলেন, ‘প্রোগ্রেস’ কারখানা রাশিয়ার সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্সের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, এবং এটি ধ্বংস হওয়া রাশিয়ার প্রতিরক্ষা উৎপাদনে বড় আঘাত হবে।