
ওমানে ৩-০ গোলে জয়ের পর ইতিহাস গড়েছে জর্দান—প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিয়েছে দেশটি। এ উপলক্ষে জর্দানের রাজধানী আম্মানে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই শুরু হয় বর্ণিল উদযাপন, যা ছড়িয়ে পড়ে শুক্রবার পর্যন্ত।
ভক্তরা গাড়ির হর্ণ বাজিয়ে, জাতীয় পতাকা উড়িয়ে, স্লোগানে স্লোগানে উদযাপন করে বিজয়। ড্রোন শোতে আকাশে লেখা হয় বার্তা—“আমরা সবাই তোমাদের সঙ্গে আছি!” এবং “বীরেরা, এটি আরও কাছে আসছে!”
২০২৬ সালের বিশ্বকাপ হবে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং কানাডায়। এশিয়ান কোয়ালিফায়ারের শেষ দিকেই জর্দান তাদের বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে। ২০২৩ সালের এশিয়ান কাপের রানার্সআপ জর্দানের হয়ে আলি অলউইন হ্যাটট্রিক করেন।
এদিনই দক্ষিণ কোরিয়া ২-০ গোলে ইরাককে হারায়, যা জর্দানের যোগ্যতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
রাজপ্রাসাদ থেকে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, লন্ডনে সফররত রাজা আবদুল্লাহ দ্বিতীয় জাতীয় দলের জার্সি পরে খেলা দেখছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন—
“আমাদের প্রিয় জনগণকে জাতীয় দলের বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে উত্তরণের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন। এই ঐতিহাসিক অর্জন আমাদের গর্বের বিষয়।”
তিনি দলের খেলোয়াড়, কোচ এবং সমর্থকদের বিশেষ ধন্যবাদ জানান।
জর্দানের বিশ্বকাপ কোয়ালিফিকেশন: ‘সময় হয়েছিল’
৪৮ বছর বয়সী গৃহিণী সোহাদ ইদরিসি বলেন, “আজ ঈদের আনন্দের সঙ্গে নাশামা (দলের ডাকনাম) বিশ্বকাপে ওঠার আনন্দও যুক্ত হয়েছে।”
২১ বছর বয়সী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফাদি কালানজি বলেন, “এ যেন স্বপ্নপূরণ। দলটি অসাধারণ খেলেছে।”
৬০ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসামা আল-শরিদা বলেন, “১৯৭৮ সাল থেকে আমি জর্দান ফুটবল অনুসরণ করছি। এটা শুধু জর্দানের নয়, সমগ্র আরব অঞ্চলের জন্য গৌরব।”
৫৫ বছর বয়সী শিক্ষক নাশাত বদর বলেন, “অনেক দিন ধরেই আমরা এই আনন্দের অপেক্ষায় ছিলাম। সময়টা এসেছিল।”
উজবেকিস্তানও প্রথমবার বিশ্বকাপে
ইরানের পেছনে থেকে গ্রুপ এ-তে দ্বিতীয় স্থান নিয়ে উজবেকিস্তান প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে উঠেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে গোলশূন্য ড্রই যথেষ্ট ছিল তাদের জন্য।
তাদের দলে রয়েছে ইউরোপের ক্লাব থেকে খেলোয়াড়—যেমন রোমার ফরোয়ার্ড এলদর শোমুরোডভ এবং ম্যানসিটি ডিফেন্ডার আবদুকাদির খুসানোভ।
জর্দানের সবচেয়ে পরিচিত খেলোয়াড় হচ্ছেন ফরাসি ক্লাব রেনেসের উইঙ্গার মুসা তামারি।
প্লে-অফের স্বপ্নে প্যালেস্টাইন ও ইন্দোনেশিয়া
কুয়েতে ২-০ গোলে জিতে প্যালেস্টাইন তাদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন টিকিয়ে রেখেছে। তারা এখন গ্রুপ বি-এর পঞ্চম স্থানে, চতুর্থ স্থানে থাকা ওমানের থেকে মাত্র এক পয়েন্ট পিছিয়ে।
আগামী মঙ্গলবার আম্মানে ওমানের বিরুদ্ধে জয় পেলে প্যালেস্টাইন চতুর্থ স্থানে উঠে প্লে-অফ রাউন্ডে যাবে।
তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান পাওয়া দলগুলো প্লে-অফ রাউন্ডে খেলবে, আর পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থান পাওয়া দল বাদ পড়বে।
ইন্দোনেশিয়াও চীনকে ১-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ সি-তে চতুর্থ স্থানে আছে এবং তাদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন বেঁচে আছে ।