
জাজিরার কৃষকদের শীতকালীন ফসলের ভালো ফলন না হওয়ার সম্ভাবনা।
নিজস্ব সংবাদদাতা
শীতকালীন ফসল উৎপাদনে এবছর বাম্পার ফলন হয়নি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কৃষকদের। সাধারণ চাষিদের মূখে হাসি ফুটলেও কপালে হাত পাইকারী ব্যবসায়ীদের। গত বছরের থেকে এবছরে দ্বিগুণ দাম বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে ফসল। প্রতি বছর এ মৌসুমে যে পরিমাণ ফসল রপ্তানি হয়, এবারে অর্ধেক পরিমাণ ফসল ওঠে নাই ডুবিসায়বর বন্দর হাট মীরাশা চাষী বাজারে।
দক্ষিণ অঞ্চলের অন্যতম বন্দর ডুবিসায়বর বন্দরের হাটের সবজি বাজার। মীরাশা চাষি বাজারে উৎপাদিত ফসলের সংকট। চলতি মৌসুমে কৃষকদের পেঁয়াজ কম হওয়ায় দেশি-বিদেশি পাইকারদের দেখা যায়নি, রাজধানীর পাইকারদের আনাগোনা তেমন নেই।
বিদেশে সবজি রপ্তানির জন্য সংকট হচ্ছে। ইউরোপ সুইজারল্যান্ডের জন্য জাজিরার সবজি পণ্য যাবেনা বলে মন্তব্য ব্যবসাহীদের । চলতি মৌসুমে হাল্কা কুয়াশা ও হটাৎ বৃষ্টির কারণে তেমন ভালো ফলন হয়নি কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজের ফলনে,
গত বছরের ন্যায় মৌসুমের প্রথমদিকে চাষিরা ফলন করতে সক্ষম না-হওয়ায়। ফসল সংকটের কারণে ফসলের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। প্রায় ৯ হাজার ৮০ হেক্টর মেট্রিকটন ফসলি জমিনের আবাদ নষ্ট হয়েগেছে। এবছর মৌসুমের শুরুতেই চাষাবাদ প্রস্তুতির কালে গত আশ্বিন ও কার্তিক মাসে শুরু হয় কৃষকদের সাথে জটিল সমস্যার সৃষ্টি। লাগাতার দিনেরাতে বজ্রবৃষ্টি আর ঘূর্ণিঝড় হওয়ার কারণে চাষিরা জমিতে কাজ করতে পারেনি। শত জল্পনা কল্পনা উপেক্ষা করে অনেক গৃহস্থ সাহস করে। জমিতে যান ফসলের টানে চাষাবাদ করছেন মরিচ পিঁয়াজ রসুন ভুট্টা সরিষা ও কালোজিরা গম ইত্যাদি ইত্যাদি।
পিছিয়ে পড়ার দিন শেষ গড়ব সোলার বাংলাদেশ। সোনালী ফসলের বেলাভূমি শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার সাধারণ কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন এনেদিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগের সরকারের আমলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা দিয়ে ছিলেন, সাড়াদেশের ফসলি উপযোগী কোন জায়গা ১ ইঞ্চি জমি অনাবাদি রাখা যাবে না। সেই কথার সাধুবাদ জানিয়ে জাজিরা উপজেলার কৃষকরা চাষাবাদ করে যাচ্ছেন অনবরত। সাধারণ কৃষকদের অর্থঋণ সহায়তা প্রদানের দাবি জানান উপজেলার অনেক সাধারণ কৃষি পরিবারের সদস্যসহ। সফল কৃষক হয়ে সহয়তা পাচ্ছে না বলে অনেকের দাবি।
কৃষকদের ফসল ক্ষতি হয়ে যাওয়ায় কারণে ফসলের উৎপাদন হয়েছে অল্প পরিমাণ। সেজন্য চরা মূল্য দিয়ে কিনতে হচ্ছে সবজি বলে দাবি পাইকারদের। বাজারের সর্বোচ্চ দাম দিলেন চাষির ফসল। কাঁচা মরিচ ৫০-৬৫, রসুন ২২০-২৮০ পিয়াজ ৮৫-৯০. বেগুন ৬৫-৭৫, মটরশুঁটি ১২০-১৪০, টমেটো ১২৫-১৪০, উস্তা ৫০-৫৫,শসা ৪৫-৬০, গাজর ৬৫-৮০ ,ফুলকপি ৫০-৬৫, মিষ্টি কুমরা ৭০-৯০, বাদাকপি ৫০-৭০,দনিয়া পাতা ৪৫-৬০, ছিম ৮০-১১৫,পুঁইশাক ৫০,৮০, পেঁপে ৪০-৫৫, অনান্য ইত্যাদি।
মিরাশা চাষী বাজার হাট পরিচালনা কমিটির সভাপতি আঃ জলিল মাদবর দৈনিক অধিকরণকে বলেন, প্রতি বছর আমাদের মীরাশা চাষি বাজার থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় সবজি রপ্তানি করে থাকি কিন্তু এবার। চাষিদের জমিতে আবাদ কম হওয়ার কারণে ইউরোপ সুইজারল্যান্ডে কোটি কোটি টাকার সবজি বাজারজাত করতে পারিনাই। এবছর অনেক গৃহস্ত ভালো ফলন করতে পারেনাই সেই জন্য আমরা ফসলের দ্বিগুণ দাম দিয়ে চাষিদের ফসল কিনতে হয়েছে।
মিরাশা চাষি বাজার হাট সমিতি কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও খোকন বানিজ্যিালয় প্রতিষ্ঠানের মালিক খোকন খালাসি। দৈনিক অধিকরণকে জানান প্রত্যেক বছর শীতের মৌসুম এলে আমার প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকার ফসল দেশের বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি করতে পারতাম। সেই বানিজ্যিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী এবছর অর্ধেক পরিমাণ ফসল হাটে এখানো আসেনি।
জাজিরা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ওমর ফারুক জানান। জাজিরায় চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে শুধুমাত্র ২ হাজার ৬৭০ হেক্টর, প্রতি হেক্টর ১২.৫ মেট্রিকটন এবং ২৪-২৫ অর্থবছরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বমোট ৩৩ হাজার ৩৭৫ মেট্রিকটন।
তিনি আরও বলেন এবছর সাড়া দেশের আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় উপজেলার বিভিন্ন ফসলি জমিতে ফলন হয়নি, প্রকৃতির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় ফসলের জন্য পুষ্টিশক্তি সঞ্চয় ও ফলন ক্ষতি হওয়ার কারণ। আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কৃষকদের আরও উদ্ভুদ্ধ হয়ে ফসল করার জন্য। চাষাবাদ বাড়াতে আগ্রহী ও সফল চাষী হয়ে ফসল উৎপাদনে সক্ষম হতে।