
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লেবাননে হামলা রুখতে কয়েকটি শর্ত বেঁধে দিয়েছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী
সীমান্তে হিজবুল্লাহ সামরিকভাবে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় হলেই কেবল যুদ্ধ থামাবে ইসরাইল। লেবাননে স্থল অভিযান বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে কূটনৈতিক সমাধানের শর্তসহ একটি নথি দিয়েছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী-আইডিএফ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সোমবার (২১ অক্টোবর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসে এমন তথ্য উঠে এসেছে। তবে ইসরাইলের একপাক্ষিক শর্তে যুদ্ধ বন্ধের চেয়ে বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
লেবাননে গেল কয়েকদিনে ইসরাইলি অভিযানে হিজবুল্লাহ প্রধানসহ বেশ কয়েক জন শীর্ষ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। এবার যুদ্ধ বন্ধে হিজবুল্লাহকে পুরোপুরি নিঃশেষ করতে নতুন পাঁয়তারা করছে তেল আবিব। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লেবাননে হামলা রুখতে কয়েকটি শর্ত বেঁধে দিয়েছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। লেবানন-ইসরাইল সীমান্তে হিজবুল্লাহর প্রভাব কমিয়ে আইডিএফের প্রভাব বাড়াতে হবে। ইসরাইলের প্রধান দুই শর্ত এমন বার্তাই দিচ্ছে।
প্রথম প্রধান শর্তে আইডিএফ দাবি করেছে, হিজবুল্লাহ যেন সীমান্তের কাছে সামরিক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ না করে তা নিশ্চিত করতে আইডিএফকে সক্রিয় হওয়ার অনুমতি দিতে হবে। দ্বিতীয় প্রধান শর্তে লেবাননের আকাশসীমায় নিজেদের যুদ্ধবিমান ও ড্রোন চলাচলের স্বাধীনতা চেয়েছে ইসরাইল।
অন্যান্য শর্তে আরও বলা হয়, বর্তমানে দক্ষিণ লেবাননের বিভিন্ন গ্রামে হিজবুল্লাহর সকল সেনা ইউনিট ও সামরিক স্থাপনা বাতিল করতে হবে। সেইসঙ্গে ইসরাইল-লেবানন সীমান্ত অঞ্চলে হিজবুল্লাহ যেন আবার ফিরে আসতে না পারে তা নজরদারিতে রাখার জন্যই এ দাবি বলে জানায় আইডিএফ।
এক্সিওসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এরমধ্যেই এসব শর্ত বা দাবি নথি আকারে হোয়াইট হাউসে পাঠিয়েছে ইসরাইল। চলমান সংঘাতের কূটনৈতিক সমাধান নিয়ে আলোচনা করতে বৈরুত সফর করেন হোয়াইট হাউসের বিশেষ দূত আমোস হোচস্টেইন।
সোমবার সফরকালীন এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবন্ধে ইসরাইল ও লেবানন উভয়পক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছে। যদিও শর্তের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি আমোস।
তিনি বলেন, আমি বৈরুতে লেবাননের সরকার, সেনাবাহিনী, অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা এবং সত্যি বলতে সে সব মানুষের সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছি যারা লেবাননের শক্তি, সামর্থ্য, স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নতুন করে ফিরিয়ে আনতে পারবে।
বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা এক্সিওসকে জানান, ইসরাইল এসব শর্ত জানানোর পর থেকে লেবাননে যুদ্ধ বন্ধ নয় বরং আরও বাড়বে। লেবানন বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এসব শর্ত মেনে নেয়ার সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করেন তিনি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহকে নিষ্ক্রিয় করার পরিকল্পনার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রকে এসব শর্তের নথি পাঠিয়ে বিশ্বের সামনে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করার চেষ্টা করছে ইসরাইল।