নেদারল্যান্ডসে ক্ষমতাসীন চার-দলীয় জোট সরকার ভেঙে পড়েছে। কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিক গীর্ট উইল্ডার্সের পার্টি ফর ফ্রিডম (PVV) অভিবাসন নীতি ঘিরে বিরোধিতার কারণে সরকার থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এর ফলে প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কোফ ঘোষণা করেছেন, এখন থেকে তিনি এবং তার মন্ত্রীরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন—যতদিন না নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

কেন ভেঙে গেল জোট?
প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্যমতে, উইল্ডার্সের PVV দলের মন্ত্রীরা তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছেন ডাচ রাজার কাছে। এই পদক্ষেপ এমন এক সময় এসেছে, যখন মাত্র তিন সপ্তাহ পর নেদারল্যান্ডস ন্যাটো নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে।

উইল্ডার্স বলেন, “আমি সবচেয়ে কঠোর আশ্রয় নীতির পক্ষে স্বাক্ষর করেছিলাম, নেদারল্যান্ডস ধ্বংসের জন্য নয়।” তিনি অভিযোগ করেন, অভিবাসন নীতিতে কার্যকর অগ্রগতি না হওয়ায় তিনি সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়েছেন।

নতুন নির্বাচন কবে?
নির্বাচনের তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী শরৎকালের আগে কোনো নির্বাচন হবে না।

স্কোফের সমালোচনা ও আহ্বান
ডানপন্থী VVD নেত্রী দিলান ইয়েশিলগোজ জানান, প্রধানমন্ত্রী স্কোফ দলগুলিকে স্মরণ করিয়ে দেন আন্তর্জাতিক সংকট, ইউরোপীয় যুদ্ধ পরিস্থিতি ও সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দার বিষয়গুলো। তা সত্ত্বেও, উইল্ডার্স সরকার থেকে সরে দাঁড়ান।

ইয়েশিলগোজ বলেন, “আমি বিস্মিত। এটা ছিল চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন।”
উইল্ডার্সের ১০-দফা চাপ
উইল্ডার্স সম্প্রতি তার জোট অংশীদারদের উপর চাপ সৃষ্টি করেন একটি ১০-দফা অভিবাসন পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য। সেখানে ছিল সেনা মোতায়েন, সীমান্ত বন্ধ ও সব ধরনের আশ্রয় প্রত্যাখ্যানের মতো কঠোর প্রস্তাব। সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন: তার দাবি মানা না হলে তিনি জোট ছাড়বেন।
ইউরোপে পপুলিস্ট প্রবণতা ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
এই সিদ্ধান্ত ইউরোপজুড়ে চলমান জাতীয়তাবাদী উত্থানের প্রেক্ষাপটে এসেছে। বিশেষ করে, পোল্যান্ডে ডানপন্থী করোল নাভরকির বিজয়ে দেখা যাচ্ছে একটি পপুলিস্ট ধারা—যার পেছনে ট্রাম্পপন্থী সমর্থনও রয়েছে।

D66 দলের নেতা রব ইয়েটেন কড়া ভাষায় বলেন, “আপনি জানেন, যদি আপনি উইল্ডার্সের সঙ্গে জোট করেন... তাহলে ভালো কিছু হবে না।”
অন্যান্য নেতাদের প্রতিক্রিয়া
ক্যারোলিন ভ্যান ডার প্লাস (ফার্মার্স সিটিজেনস মুভমেন্ট): “সে নেদারল্যান্ডসকে নয়, গীর্ট উইল্ডার্সকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।”

নিকোলিন ভ্যান ফ্রনহোভেন (নিউ সোশ্যাল কনট্র্যাক্ট পার্টি): “উইল্ডার্স ছাড়া সংখ্যালঘু সরকার চলতে পারে।”

ফ্রান্স টিমারম্যানস (বিরোধী নেতা): “আমি কোনো সংখ্যালঘু সরকার সমর্থন করবো না। দ্রুত নির্বাচন দিন।