
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার একটি প্রেসিডেনশিয়াল ঘোষণায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন বা এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশ নিতে চাওয়া বিদেশি নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। হার্ভার্ডের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঘোষণায় ট্রাম্প প্রশাসন জাতীয় নিরাপত্তার উদ্বেগ দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের হার্ভার্ডে পড়াশোনার জন্য প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। এ নিয়ে হার্ভার্ড এক বিবৃতিতে জানায়, “এই পদক্ষেপ হার্ভার্ডের ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ট অধিকারের সরাসরি লঙ্ঘন এবং সরকারের বেআইনি প্রতিশোধমূলক সিদ্ধান্ত।”
হার্ভার্ড আরও জানিয়েছে, “আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”
এই নিষেধাজ্ঞা ভবিষ্যতে ছয় মাসেরও বেশি সময়ের জন্য বর্ধিত করা যেতে পারে।
ট্রাম্পের ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে হার্ভার্ডের যেসব বর্তমান আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী তার ঘোষণায় বর্ণিত শর্তে পড়েন, তাদের শিক্ষা বা এক্সচেঞ্জ ভিসাও বাতিল করা যায়।
এই নির্দেশনা এমন সময় এলো, যখন বস্টনের একটি ফেডারেল বিচারক সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি প্রশাসনকে হার্ভার্ডে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করবেন। হার্ভার্ড দাবি করেছে, প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা ও পাঠ্যক্রমে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অনুরোধ অস্বীকার করায় এই ধরনের বহুমুখী আক্রমণ চালাচ্ছে সরকার।
২২ মে, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিসটি নোয়েম ঘোষণা করেছিলেন, হার্ভার্ডের স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম সার্টিফিকেশন তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হয়েছে, যা তাদের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমতি দেয়।
এই সিদ্ধান্ত সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন জেলা বিচারক অ্যালিসন বুরাফস অস্থায়ীভাবে স্থগিত করেন। আদালতে শুনানির আগের দিন প্রশাসন জানায়, তারা এখন একটি দীর্ঘ প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হার্ভার্ডের সার্টিফিকেশন চ্যালেঞ্জ করবে।
তবে বিচারক বুরাফস বলেন, হার্ভার্ডের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞা জারি করবেন।
রয়টার্সে দেখা একটি স্টেট ডিপার্টমেন্টের অভ্যন্তরীণ কেবল বার্তায় বলা হয়েছে, আদালতের শুনানির পরদিন সব দূতাবাসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, হার্ভার্ডে আসতে ইচ্ছুক ভিসা আবেদনকারীদের অতিরিক্ত যাচাই করতে হবে।
ট্রাম্পের দুই পৃষ্ঠার বুধবারের ঘোষণায় বলা হয়েছে, হার্ভার্ডের বিদেশি শক্তির সঙ্গে “উদ্বেগজনক সম্পর্ক” ও “চরমপন্থার ইতিহাস” রয়েছে এবং এর “বিদেশি প্রতিপক্ষদের সঙ্গে ব্যাপক সংশ্লিষ্টতা”, বিশেষ করে চীনের সঙ্গে, উল্লেখযোগ্য।
এফবিআই দীর্ঘদিন ধরেই সতর্ক করেছে যে, বিদেশি প্রতিপক্ষরা মার্কিন উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার সহজ প্রবেশাধিকারকে অপব্যবহার করে তথ্য চুরি, গবেষণা-উন্নয়ন শোষণ ও মিথ্যা প্রচার চালিয়ে থাকে।
ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে, হার্ভার্ডে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অপরাধ বেড়েছে, এবং ক্যাম্পাসে কিছু আচরণবিধি লঙ্ঘনের যথাযথ শাস্তি না দেওয়া হয়েছে। তারা বিদেশি শিক্ষার্থীদের অপরাধমূলক বা বিপজ্জনক কার্যকলাপ সম্পর্কেও যথাযথ তথ্য হোমল্যান্ড সিকিউরিটিকে দেয়নি।