মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা এক নতুন পর্যায়ে পৌঁছেছে। শনিবার ভোরে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী (IAF) ইরানের কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণাগার ও উৎক্ষেপণ অবকাঠামোতে একযোগে বোমা হামলা চালিয়েছে। একইসঙ্গে লেবাননের দক্ষিণে হেজবুল্লাহর রাদওয়ান বাহিনীর ঘাঁটিতেও ইসরায়েলি নৌবাহিনীর হামলা হয়েছে।
IAF-এর হিব্রু ভাষার এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে জানানো হয়:
“বিমান বাহিনী এখন ইরানের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণাগার ও উৎক্ষেপণ অবকাঠামোর বিরুদ্ধে একযোগে হামলা শুরু করেছে।”
এই নতুন অভিযানটি শুক্রবার রাতের একটি বড়সড় হামলার ধারাবাহিকতায় এসেছে। সেখানে প্রায় ১৫টি ইসরায়েলি ফাইটার জেট পশ্চিম ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালায় এবং ৩০টিরও বেশি সুনির্দিষ্ট অস্ত্র ব্যবহার করা হয়।
সেনাবাহিনী প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ককপিট থেকে লক্ষ্য শনাক্ত করে পাইলটরা হামলা চালাচ্ছেন। এক পাইলট হিব্রু ভাষায় বলেন:
“আমরা লক্ষ্য দেখছি, এখন অভিযান শুরু করছি।”
এরপর তাকে একটি ড্রোন ধ্বংস করতে দেখা যায়।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইরান থেকে ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে ছোড়া ১৫টির বেশি ড্রোন সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে।
হেজবুল্লাহর রাদওয়ান বাহিনীর ওপর হামলা
এদিকে, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় নাকৌরা এলাকায় হেজবুল্লাহর রাদওয়ান বাহিনীর একটি সন্ত্রাসী স্থাপনাতেও হামলা চালানো হয়েছে। IDF এক বিবৃতিতে জানায়:
“গতরাতে, ইসরায়েলি নৌবাহিনীর একটি জাহাজ দক্ষিণ লেবাননের নাকৌরায় হেজবুল্লাহর রাদওয়ান বাহিনীর সন্ত্রাসী অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।”
তারা দাবি করে, এই ঘাঁটি ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার প্রস্তুতি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
এই হামলার ঘটনা ঘটে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক হেজবুল্লাহকে সতর্ক করে দেওয়া এক হুঁশিয়ারির ঠিক একদিন পর। তিনি বলেছিলেন, “ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের মাঝে হেজবুল্লাহ জড়িয়ে পড়লে ফলাফল হবে ভয়াবহ।”
এই যুগপৎ হামলা স্পষ্ট করে যে, ইসরায়েল এখন সরাসরি ইরান এবং তার আঞ্চলিক সহযোগী হেজবুল্লাহ—দুজনকেই সামরিকভাবে চাপে রাখতে চায়। এতে করে সংঘাত আরও বিস্তৃত আকার নিতে পারে বলেই আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক মহল।