মাদারীপুর-শরীয়তপুর দুইটি জেলার নদী কীর্তিনাশার সীমানায় খোয়াজপুর-টেকেরহাট বন্দরে স্পিডবোট নিয়ে ডাকাতি করার সময় স্থানীয়দের সঙ্গে ডাকাত দলের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ডাকাতদের ছোরা গুলিতে দুই জেলায় অন্তত ৯ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পরে পালানোর সময় ৭ জন ডাকাতকে আটকের পর গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে কীর্তিনাশা নদীর ডোমসার ইউনিয়নের তেতুলিয়া এলাকা থেকে ডাকাতদের আটক করা হয়। এ সময় ডাকাতদের ব্যবহৃত একটি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে মাদারীপুরের রাজারচর এলাকায় বাল্কহেডে ডাকাত দল ডাকাতির চেষ্টা করে। পরে তাদের ধাওয়া দেন স্থানীয়রা। ডাকাতরা স্পিডবোট নিয়ে পালিয়ে শরীয়তপুরের ডোমসার ইউনিয়নের তেতুলিয়া এলাকায় গেলে স্থানীয়রা তাদের গতিপথ রোধ করে বাল্কহেড দিয়ে। এ সময় ডাকাতরা হাতবোমা ও এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে আহত হয় বেশ কয়েকজন স্থানীয় লোকজন। পরে ডাকাতরা স্পিডবোট ফেলে পালানোর সময় ৭ জনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
মারধরের পর গুরুতর আহত ডাকাতদের সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে দুইজন ডাকাতকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এছাড়াও ডাকাতদের ছোরা গুলিতে চারজন আহত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। এদের মধ্যে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
ডাকাতদের ছোরা গুলিতে দুই জেলায় অন্তত ৯ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। মাদারীপুর জেলায় একই ডাকাতদের গুলিতে পাঁচজন আহত হয়েছে। তাদের মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ডোমসার এলাকার রুবেল শিকদার বলেন, ‘ডাকাতরা স্পিড বোট দিয়ে ডোমসার ইউনিয়নের তেতুলিয়া এলাকার হিরা ইটের ভাটার কাছে এলে স্থানীয় লোকজন বেরিকেট দেয়। তখন ডাকাত দল এলোপাতাড়িভাবে গুলি করতে থাকে। একপর্যায়ে স্পিড বোট থেকে নেমে পালাবার চেষ্টা করে ডাকাতরা। পরে স্থানীয় লোকজন ৭ ডাকাতকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয়।’
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মুনতাসির খান বলেন, ডাকাতদের গুলিতে চারজন সাধারণ মানুষ আহত হয়ে প্রথমে হাসপাতালে আসে। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পরে আহত অবস্থায় ৭ ডাকাতকে হাসপাতালে নিয়ে আসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের মধ্যে দুই ডাকাতকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয় লোকজন ডাকাতদের আটক করে গণপিটুনি দেয়। পরে আমরা ডাকাতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাকাতদের ব্যবহৃত একটি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’