মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে ৭.৭ এবং ৬.৪ মাত্রার দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, যার ফলে থাইল্যান্ডের বাংককে একটি নির্মাণাধীন ৩০-তলা ভবন ধসে পড়ে ৪৩ জন নির্মাণ শ্রমিক চাপা পড়েছে। বাংককে ২ জন শ্রমিক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, এবং মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে এবং উদ্ধার কাজ শুরু করেছে।
ভূমিকম্পের বিস্তারিত: মার্চ ২৮, ২০২৫ তারিখে দুপুর ১২:৫০ (স্থানীয় সময়) সময় মিয়ানমারের সাগাইং শহরের উত্তর-পশ্চিমে ১৬ কিলোমিটার (১০ মাইল) দূরে ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) গভীরে প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর পর আরও একটি ৬.৪ মাত্রার আফটারশক অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের ফলে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং চীনসহ একাধিক দেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বাংককে ভবন ধসে শ্রমিকদের মৃত্যু: থাইল্যান্ডের বাংককের চ্যাটুচাক এলাকায় একটি অসমাপ্ত ৩০-তলা ভবন ধসে পড়ে, এতে ৪৩ জন নির্মাণ শ্রমিক চাপা পড়ে। এদের মধ্যে ২ জন নিহত হয়েছেন, এবং কিছু শ্রমিক জীবিত উদ্ধার হয়েছে, তবে আরও অনেকেই ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়ে আছেন। থাই প্রধানমন্ত্রী, পায়েতংতর্ন শিনাওত্রা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং বাংককের বেশ কিছু এলাকা দুর্যোগপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
মিয়ানমারে উদ্ধার কাজ: মিয়ানমারের সেনাবাহিনী উদ্ধার কাজ শুরু করেছে এবং রাজধানী নেপিডোতে একটি হাসপাতালকে "মাস ক্যাজুয়ালটি এরিয়া" হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকা ধ্বংসাবশেষে ভরপুর, এবং অনেক মানুষ আহত হয়েছে। মান্দালয়, সাগাইংসহ অন্যান্য শহরে ভূমিকম্পের ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
চীনে ভূমিকম্পের প্রভাব: চীনের ইউনান ও সিচুয়ান প্রদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, এবং রুইলি শহরে কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কিছু আহত ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চীনের অন্যান্য শহরেও ভূমিকম্পের প্রভাব ছিল এবং বাড়ি ও স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পূর্ববর্তী ভূমিকম্পের ইতিহাস: মিয়ানমারে ভূমিকম্প সাধারণ ঘটনা। ১৯৩০ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত এখানে বেশ কয়েকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। সর্বশেষ, ২০১৬ সালে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি মিয়ানমারের প্রাচীন শহর বাগানে তিনজনের মৃত্যু ঘটিয়েছিল।
থাইল্যান্ডে ভূমিকম্পের প্রভাব: থাইল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে এবং রাজধানী বাংককসহ সারা দেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতর্ন শিনাওত্রা ভূমিকম্পের প্রভাব মূল্যায়ন করার জন্য একটি জরুরি বৈঠক ডাকেন।
এই ভূমিকম্পের পর মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে উদ্ধার কাজ চলছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে জরুরি সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।