মিয়ানমারের শক্তিশালী ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। শনিবার পর্যন্ত, দেশটির সামরিক সরকার জানিয়েছে যে ১,০০২ জন মারা গেছেন, ২,৩৭৬ জন আহত এবং ৩০ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে আঘাত হানার পর ভূমিকম্পটির পর একাধিক আফটারশক অনুভূত হয়, যার মধ্যে একটি ছিল ৬.৪ মাত্রার।
থাইল্যান্ডে, ভূমিকম্পটি ব্যাংকক এলাকার বৃহত্তর অংশকে কেঁপে ওঠায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, মিয়ানমারে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা দিতে বিভিন্ন দেশ তাদের উদ্ধার ও ত্রাণ দল পাঠিয়েছে। রাশিয়া, মালয়েশিয়া ও চীন সহ বেশ কয়েকটি দেশ উদ্ধার কর্মী পাঠিয়েছে।
রাশিয়া: চিকিৎসা দল পাঠানো
রাশিয়া মিয়ানমারে ভূমিকম্পের শিকারদের জন্য একটি চিকিৎসা দল পাঠিয়েছে। রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চিকিৎসক দলের মধ্যে সংক্রামক রোগ, পুনরুদ্ধার এবং ট্রমাটোলজি বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন।
এছাড়া, রাশিয়ার জরুরি পরিষেবা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, দুইটি বিমান রাশিয়ার উদ্ধার কর্মীদের নিয়ে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন শহরে অবতরণ করেছে। এই উদ্ধার দলগুলোর মধ্যে কুকুর ইউনিট, অ্যানেসথেসিওলজিস্ট এবং মনোবিজ্ঞানীসহ বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন। তারা ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবে।
হংকং: উদ্ধার কর্মী পাঠানো
হংকং ৫১ সদস্যের একটি উদ্ধার দল মিয়ানমারে পাঠিয়েছে, যার মধ্যে দমকল কর্মী, অ্যাম্বুলেন্স কর্মী এবং দুইটি উদ্ধার কুকুর রয়েছে। তারা ৯ টন (১৮,০০০ পাউন্ড) যন্ত্রপাতি নিয়ে গেছে, যার মধ্যে লাইফ ডিটেকটর, ইট কাটিং মেশিন এবং স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং সিস্টেম রয়েছে।
চীন: উদ্ধার ও সহায়তা
চীন মিয়ানমারকে ১০০ মিলিয়ন ইউয়ান (১৩.৮ মিলিয়ন ডলার) মানবিক সহায়তা প্রদান করবে বলে ঘোষণা করেছে। এছাড়াও, চীন আরও একটি ৮২ সদস্যের উদ্ধার দল মিয়ানমারে পাঠিয়েছে। চীনের বিশেষ দল ব্লু স্কাই রেসকিউ গ্রুপও মিয়ানমারের উত্তরাংশে ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নিতে যাচ্ছে। চীন ৮০টি তাঁবু এবং ২৯০টি কম্বলও পাঠিয়েছে।
নিউজিল্যান্ড: সহায়তা
নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স বলেছেন যে, তার সরকার আন্তর্জাতিক রেড ক্রস আন্দোলনের মাধ্যমে ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান করবে।
দক্ষিণ কোরিয়া: ২ মিলিয়ন ডলার সহায়তা
দক্ষিণ কোরিয়া মিয়ানমারে পুনরুদ্ধারের জন্য ২ মিলিয়ন ডলারের মানবিক সহায়তা প্রদান করবে। কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে এবং প্রয়োজনে অতিরিক্ত সহায়তা প্রদান করবে।
এভাবে, বিভিন্ন দেশ মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়ে ভূমিকম্পের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নিজেদের সহায়তা প্রদান করছে।