মিয়ানমারের শাসক সামরিক বাহিনী বুধবার একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে, যাতে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের কারণে ৩,০০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ভূমিকম্প-পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতায় সহায়তা পাওয়া যাবে। সামরিক বাহিনীর উচ্চ কমান্ড এই ঘোষণা জানিয়েছে, যা মিয়ানমারের রাষ্ট্র পরিচালিত টেলিভিশন MRTV-তে বুধবার রাতে সম্প্রচারিত হয়।
এই যুদ্ধবিরতি ২২ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এবং এর উদ্দেশ্য হলো ভূমিকম্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করা। এ ঘোষণা আসার আগে, মিয়ানমারের বিরোধী সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলি তাদের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল, যাতে তারা এই মানবিক সহায়তা প্রচেষ্টায় অংশ নিতে পারে। তবে, সামরিক বাহিনী তাদের আক্রমণ বন্ধ করতে অনিচ্ছুক ছিল। মিয়ানমারের রাজধানী নেপিতাওতে উদ্ধারকারীরা পাঁচ দিন পর একটি হোটেল ধ্বংসস্তূপ থেকে দুটি মানুষকে জীবিত উদ্ধার করেছে। এছাড়া, সাগাইং শহরে একটি অতিথি নিবাসের ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও একজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ভূমিকম্পের ফলে হাজার হাজার ভবন ধসে পড়ে, সেতু ও সড়ক ভেঙে যায়। বুধবার মৃতের সংখ্যা ৩,০০৩ জনে পৌঁছেছে, এছাড়াও ৪,৫০০ জনের বেশি আহত হয়েছে। জাতীয় মানবিক সহায়তা উদ্যোগের জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা এছাড়াও, মিয়ানমারে বিক্ষোভকারী প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলি তাদের এক মাসের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে, যাতে ভূমিকম্পের ত্রাণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে। মানবিক সহায়তার জন্য বিভিন্ন দেশ মিলিয়ন ডলার সহায়তা ঘোষণা করেছে, এ ছাড়া ভারতের পক্ষ থেকেও উদ্ধারকর্মী এবং জাহাজ পাঠানো হয়েছে। চীনা রেড ক্রস কনভয়ের উপর হামলা মঙ্গলবার, একটি বিরোধী গোষ্ঠী দাবি করেছে যে সামরিক বাহিনী চীনা রেড ক্রসের ৯টি যানবাহন নিয়ে যাওয়া একটি ত্রাণ কনভয়ে হামলা করেছে। তবে সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, কনভয় কর্তৃপক্ষকে পূর্বেই রুট জানায়নি এবং সুরক্ষা বাহিনী কনভয়টিকে থামাতে গুলি ছোড়ে। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা অস্ট্রেলিয়া, ভারত, চীন, রাশিয়া, এবং ইউএई-এর উদ্ধারকর্মীরা মিয়ানমারে পৌঁছেছে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রও ২ মিলিয়ন ডলার ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। ভূমিকম্পের ক্ষতির চিত্র স্পষ্ট হচ্ছে না এখন পর্যন্ত, মিয়ানমারের দুটি প্রধান শহর, ম্যান্ডালে এবং নেপিতাও থেকে ভূমিকম্পের ক্ষতির সংবাদ পাওয়া গেছে, তবে আরো দূরবর্তী অঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠেনি। সিঙ্গু শহরে একটি সোনালী খনিতে ভূমিধসের কারণে ২৭ জন মারা গেছে।