পাকিস্তানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে তার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার, তবে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের রাজনৈতিক এবং বানিজ্যিক বাণিজ্যিক সম্পর্কে ভাটা পড়েছে । সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানের পণ্যগুলোর উপর ২৯% শুল্ক আরোপ করেছেন, যা পাকিস্তানির জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে, পাকিস্তানের পণ্যগুলির উপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ০-২% থেকে ২৯% পর্যন্ত রয়েছে, এবং কিছু ক্ষেত্রে এই শুল্ক ৫৮%-এ পৌঁছাতে পারে।
২০২৪ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের মোট আমদানির পরিমাণ ছিল ৩.৩৬ ট্রিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে পাকিস্তান থেকে আমদানি ছিল মাত্র ৫.৪৭ বিলিয়ন ডলার। যদিও পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে বৃহত্তম পণ্য সরবরাহকারী নয়, তবুও পাকিস্তানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার, যার মোট রপ্তানি ৬ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি, যা দেশের মোট রপ্তানির ১৮%।
এখন পাকিস্তানকে দুটি প্রধান কৌশল গ্রহণ করতে হবে: প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক সুরক্ষিত করা এবং দ্বিতীয়ত, নতুন বাজার ও গন্তব্য খুঁজে বের করা। এই জন্য পাকিস্তানকে মেটালস, কার্পেট, ফার্নিচার, মাংস প্রস্তুতি ইত্যাদি নতুন পণ্যের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।
বাণিজ্য পরিস্থিতি ও নতুন সুযোগ
বর্তমানে, পাকিস্তান টেক্সটাইল এবং পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় অংশীদার হলেও, নতুন শুল্ক বৃদ্ধির কারণে পাকিস্তানকে তাদের পণ্যের দাম বাড়ানো এবং পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক কাঠামো আলোচনা করার সুযোগ পেতে হবে। একই সাথে, পাকিস্তানকে নতুন বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে হবে, বিশেষত ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং চীনসহ অন্য দেশের সঙ্গে।
চীনের সঙ্গে সম্পর্ক এবং CPEC
চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (CPEC) পাকিস্তানকে চীনসহ অন্যান্য আঞ্চলিক দেশগুলির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করবে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় বড় একটি বাণিজ্যিক রুট হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।
অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও অর্থনৈতিক সংস্কার
পাকিস্তানকে তার অভ্যন্তরীণ শিল্প ও উৎপাদন ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে, বিশেষত যেখানে বৈদেশিক পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে। তবে, স্থানীয় শিল্পের জন্য উৎসাহমূলক উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন, যেমন প্রযুক্তি স্থানান্তরের জন্য অর্থায়ন এবং সহজলভ্য ক্রীড়া ব্যবস্থার উদ্যোগ।
এছাড়া, পাকিস্তানকে বাণিজ্যিক চুক্তির মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে, যেমন PTAs এবং FTAs (ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্টস), যা খরচ কমাবে এবং পাকিস্তানের বাজারে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।
নতুন শুল্ক নীতির প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির ফলে পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশগুলি তাদের পণ্যের মূল্যে বৃদ্ধির সম্মুখীন হতে পারে। তবে, পাকিস্তান একটি চমৎকার সুযোগ পেতে পারে শুল্ক কাঠামোর সংস্করণ এবং ভিন্ন পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে।