ইসরায়েল তুরস্কের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে ইসরায়েল সিরিয়ার সামরিক বিমানবন্দরগুলিতে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে, যা ছিল তুরস্ককে স্পষ্ট বার্তা পাঠানোর জন্য, যাতে তারা সিরিয়ার আকাশে ইসরায়েলি বিমান চলাচলে বাধা না দেয়। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী হামা সামরিক বিমানবন্দর এবং T-4 বিমানবেসের কৌশলগত সুবিধাগুলিতে হামলা করেছে, যেখানে রানওয়ে, জ্বালানি স্টোরেজ সাইট, রাডার সিস্টেম এবং অস্ত্রভাণ্ডার ধ্বংস করা হয়েছে।
এই হামলা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনের অধীনে থাকা বিমানবেসগুলিতে ঘটেছে, যা বর্তমানে তুরস্ক দ্বারা আরও ব্যবহার এবং বিমান প্রতিরক্ষা সিস্টেম স্থাপনের জন্য পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তুরস্ক সিরিয়ার মধ্যে তাদের সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য আগ্রহী এবং T-4 বিমানবেস নিয়ন্ত্রণে নিতে চাইছে।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলের হামলার প্রতি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে, ইসরায়েলকে "বর্ণবাদী এবং মৌলবাদী" আখ্যা দিয়েছে এবং তাদের আক্রমণগুলোকে "অযৌক্তিক" এবং "অঞ্চলীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি" বলে মন্তব্য করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগান সিরিয়ায় রাশিয়া এবং ইরান এর প্রভাব কমে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে তুরস্কের প্রভাব পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন, যা নব্য-ওসমানী শক্তি হিসেবে অঞ্চলে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে।
তুরস্কের সাম্প্রতিক বক্তৃতা, বিশেষ করে রমজান উপলক্ষে ইসরায়েল ধ্বংসের জন্য প্রার্থনা, ইসরায়েল এবং আমেরিকার পর্যবেক্ষকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এছাড়া, তুরস্ককে F-35 যুদ্ধবিমান বিক্রি করার ব্যাপারে কিছু শর্ত আরোপ করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে, যাতে তুরস্কের কার্যক্রমের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা তুরস্কের সিরিয়ার প্রতি পদক্ষেপগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, কারণ তুরস্ক যদি দীর্ঘমেয়াদী বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন করতে সফল হয়, তবে এটি ইসরায়েলের আকাশযুদ্ধ কার্যক্রমের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরদোগানের উদ্দেশ্য সিরিয়া সীমান্তের ওপরে তার প্রভাব বাড়ানো এবং মধ্যপ্রাচ্যে মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রভাব প্রতিষ্ঠা করা।
এছাড়া, ইসরায়েলি নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে, তুরস্কের এই কৌশল সিরিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে, যা ইসরায়েলি নিরাপত্তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।