গাজার ওপর ইসরায়েলের আক্রমণ গত মাসে পুনরায় শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল গাজার বেশিরভাগ এলাকা দখল করে নিয়েছে। বর্তমানে তারা ৫০%-এরও বেশি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে এবং ফিলিস্তিনিদের সংকুচিত হয়ে ছোট ছোট অঞ্চলগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হচ্ছে।
গাজার সীমান্তের কাছে ইসরায়েলি সেনারা সবচেয়ে বড় এলাকা দখল করেছে, যেখানে তারা ফিলিস্তিনি বাড়িঘর, কৃষিজমি এবং পরিকাঠামো ধ্বংস করে ফেলেছে, যার ফলে ওই এলাকায় বসবাস করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই সামরিক নিরাপত্তা অঞ্চলটি সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে দ্বিগুণ আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এই ভূমি দখলকে একটি সাময়িক প্রয়োজনে হিসেবে উপস্থাপন করছে, যার উদ্দেশ্য হামাসের কাছ থেকে অপহৃত শেষ বেসামরিকদের মুক্তি পাওয়া। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলি এবং গাজা বিশেষজ্ঞরা জানান, এই এলাকা দীর্ঘমেয়াদে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার হতে পারে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গত সপ্তাহে জানিয়েছেন যে, হামাস পরাজিত হওয়ার পরেও ইসরায়েল গাজায় নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে এবং ফিলিস্তিনিদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করবে।
সেনাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৮ মাস আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই সীমান্তের কাছে ধ্বংসযজ্ঞ চলছে। তারা জানিয়েছে, তারা প্রতিটি ফিলিস্তিনি বাড়ি, কৃষিজমি, পাইপ, গাছ, ও শিল্প প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে, যাতে কোনো বিদ্রোহী বা সশস্ত্র ব্যক্তি সেখানে আশ্রয় নিতে না পারে।
এছাড়া, গাজার দক্ষিণ অংশে একটি নতুন করিডর তৈরির পরিকল্পনা চলছে, যা রাফাহ শহরকে বাকি এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করবে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলি দাবি করেছে যে এই কর্মকাণ্ড জাতিগত নির্মূলের সমতুল্য, কারণ এতে ফিলিস্তিনিরা তাদের ঘরবাড়ি এবং ভূমি পুনরুদ্ধার করতে পারবেন না। তবে ইসরায়েলি সেনারা বলছে, তারা সাধারণ জনগণকে নিরাপদ রাখতে কাজ করছে এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে চেষ্টা করছে।
এদিকে, গাজার ভূমি সংকুচিত হওয়া এবং হাজার হাজার ফিলিস্তিনির উচ্ছেদের ফলে অঞ্চলটির ভবিষ্যত সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।