দানা’ আতঙ্কে কলকাতায় ১৫ ঘণ্টা বিমান চলাচল বন্ধ, বাতিল বহু ট্রেন
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও শক্তি সঞ্চয় করে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাতে পশ্চিমবঙ্গে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। দুর্যোগের আশঙ্কায় এবার আগাম সতর্কতা হিসেবে ১৫ ঘণ্টা বিমান চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
কলকাতা বিমানবন্দর। ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বুধবার (২৩ অক্টোবর) এক বিজ্ঞেপ্তিতে দমদম আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হচ্ছে বিমানবন্দর। ওই সময়ে বিমানবন্দরে কোনো বিমান ওঠা নামা করবে না।
ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর জানিছে, বৃহস্পতিবার ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারার মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে ‘দানা’। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চল ছাড়াও কলকাতায় ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার শহরে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি থাকতে পারে ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ভারি থেকে অতি ভারী বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সম্ভাব্য দুর্যোগের আশঙ্কায় ভারতের রেল কর্তৃপক্ষ আগেই বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব রেলের একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হয়েছে প্রচুর লোকাল ট্রেনও। শিয়ালদহ থেকে দক্ষিণ শাখা ও হাসনাবাদ শাখার মোট ১৯০টি ট্রেন বাতিল রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সব মিলিয়ে ১৪ ঘণ্টা শিয়ালদহ দক্ষিণ এবং হাসনাবাদ শাখায় বন্ধ থাকবে ট্রেন চলাচল। হাওড়া স্টেশন থেকেও শুক্রবার কিছু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
ভারতের আলিপুর আবহাওয়া কেন্দ্রের বরাতে দেশটির গণমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, জলভাগের ওপর দিয়ে আসার কারণে জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে শক্তি বৃদ্ধি করছে ঘূর্ণিঝড়। বুধবার রাতেই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে ‘দানা’।
আবহাওয়া দফতরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সাগরদ্বীপ ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়টি। ‘দানা’ স্থলভাগে আছড়ে পড়ার আগেই কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোতে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া দফতর বলছে, বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাত পর্যন্ত সমুদ্রের ওপর ঝড়ের গতি থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। দমকা হাওয়ার গতি কখনও কখনও হতে পারে ১২০ কিলোমিটার। শুক্রবার ঝড়ের বেগ কিছুটা কমতে পারে। ওইদিন সকালে ৯৫ থেকে ১০৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝড় চলতে পারে। রাতে ঝড়ের গতি কমে হবে ৬৫ থেকে ৭৫ কিলোমিটার।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। অর্থাৎ, ল্যান্ডফলের (স্থলভাগ অতিক্রম) পর ঝড়ের গতি কমে যাবে। শক্তি হারিয়ে শনিবারের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি আবার নিম্নচাপে পরিণত হবে।