ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, তাঁর দেশ আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই প্যালেস্টাইনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে। ফ্রান্স ৫ টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "আমাদের স্বীকৃতির দিকে এগিয়ে যেতে হবে, এবং আমরা তা করব আগামী কয়েক মাসে।"
ম্যাক্রোঁ জানান, এই স্বীকৃতি কোনও পক্ষকে খুশি করার জন্য নয়, বরং "যখন সময় হবে তখন ঠিক কাজটাই করব" এই উদ্দেশ্যেই তিনি তা বিবেচনা করছেন। জুন মাসে জাতিসংঘের একটি সম্মেলনে, যা ফ্রান্স ও সৌদি আরব যৌথভাবে আয়োজন করবে, এই পদক্ষেপ চূড়ান্ত হতে পারে।
প্যালেস্টাইনের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভার্সেন আঘাবেকিয়ান শাহিন এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি "প্যালেস্টাইনিদের অধিকার এবং দুই-রাষ্ট্র সমাধান রক্ষায় একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।"
অন্যদিকে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার একে "হামাসকে উৎসাহ দেওয়া" বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “বর্তমান বাস্তবতায় একটি কাল্পনিক প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে একতরফাভাবে স্বীকৃতি দেওয়া সন্ত্রাসবাদের পুরস্কার হবে এবং আমাদের অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা আরও দূরে সরিয়ে দেবে।”
বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৪৬টি দেশ প্যালেস্টাইনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০২৪ সালে আর্মেনিয়া, স্লোভেনিয়া, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, স্পেন, বাহামা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, জ্যামাইকা এবং বার্বাডোস এই তালিকায় যোগ দেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং জার্মানির মতো বড় পশ্চিমা দেশগুলো এখনও স্বীকৃতি দেয়নি।
ম্যাক্রোঁ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, প্যালেস্টাইনকে স্বীকৃতি দিলে মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশও ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার পথে এগোতে পারে। বর্তমানে সৌদি আরব, ইরান, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেন ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি।
তিনি বলেন, “প্যালেস্টাইনকে স্বীকৃতি দিলে আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে পারব যে, আমরা ইসরায়েলের অস্তিত্বকে অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে, যেমন ইরান, তাদের বিরোধিতা করছি এবং এই অঞ্চলে সমষ্টিগত নিরাপত্তার পক্ষে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ম্যাক্রোঁর এই মন্তব্য ফ্রান্সের দীর্ঘদিনের দুই-রাষ্ট্র সমাধান নীতিরই প্রতিফলন, যা অক্টোবর ৭, ২০২৩-এ হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পরও অটল রয়েছে।
এই স্বীকৃতি কার্যকর হলে তা ফ্রান্সের নীতিতে বড় রকমের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেবে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কেও উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
সূত্র: আল জাজিরা ও বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা