ইসরায়েলের শত শত সাবেক ও বর্তমান সেনা সদস্য একটি নতুন পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে গাজা যুদ্ধ বন্ধ ও বন্দী বিনিময়ের দাবি জানানো হয়েছে। শুক্রবার এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে পিটিশনে স্বাক্ষর করেন সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা, যার মধ্যে রয়েছে ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ৮২০০, বিশেষ বাহিনী ‘সায়েরেট মাতকাল’, ‘শায়েতেত’ ও ‘শালদাগ’-এর মতো এলিট ইউনিট।
ইসরায়েলি সম্প্রচারমাধ্যম ক্যান (KAN) জানিয়েছে, স্বাক্ষরকারীদের ২০-৩০ শতাংশই সক্রিয় রিজার্ভ সেনা সদস্য। এই আন্দোলন শুরু হয় বৃহস্পতিবার থেকে, এবং এখন পর্যন্ত মোট ৬টি পিটিশন স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সেনা সদস্যদের ধারাবাহিক প্রতিবাদ:
প্রথম পিটিশনে প্রায় ১,০০০ জন বিমান বাহিনীর সদস্য স্বাক্ষর করেন, পরে এতে যুক্ত হন আরও ১,০০০ জন শিক্ষাবিদ।
দ্বিতীয় পিটিশন স্বাক্ষর করেন শত শত সাঁজোয়া কোর ও নৌবাহিনীর সদস্য।
তৃতীয়টি আসে রিজার্ভ বাহিনীর ডজনখানেক চিকিৎসকের পক্ষ থেকে।
চতুর্থ পিটিশনে স্বাক্ষর করেন সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা ইউনিট ৮২০০-এর শত শত সদস্য।
পঞ্চম পিটিশনে যুক্ত হন প্রায় ১০০ জন সামরিক চিকিৎসক।
সর্বশেষ পিটিশনে স্বাক্ষর করেন বিশেষ ও এলিট বাহিনীর শত শত সদস্য।
নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারি
প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যারা এই পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন, তারা যদি সক্রিয় সেনা হন, তাহলে তাদের বরখাস্ত করা হবে।
গাজায় যুদ্ধ পরিস্থিতি
১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল আবার গাজায় আক্রমণ শুরু করে, ভেঙে দেয় জানুয়ারি ১৯-এর যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তি।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫১,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
পুরো গাজা ভূখণ্ড ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং তা বাসযোগ্যতার বাইরে চলে গেছে বলে জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।
আন্তর্জাতিক বিচারিক পদক্ষেপ
গত নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (ICC) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
এছাড়া, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ICJ)-এ।