ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ–এর একটি প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। হোয়াইট হাউস আশা করছে, আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাজ্যের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত ও ঘোষনা হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক দেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে করে উচ্চ শুল্কের ক্ষতিকর প্রভাব এড়ানো যায়। বর্তমানে ৯০ দিনের জন্য ‘পারস্পরিক শুল্ক’ স্থগিত রাখা হয়েছে, যার মধ্যে এসব দেশ চুক্তিতে পৌঁছাতে পারলে স্থায়ী শুল্কের আশঙ্কা দূর হবে।
প্রথম ধাপে ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এবং পরে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে চুক্তি হবে বলে হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে। এক শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে চুক্তিটি "খুব শিগগিরই", সম্ভবত “দুই বা তিন সপ্তাহের মধ্যে” সম্পন্ন হতে পারে।
এমন অবস্থায় ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি যুক্তরাজ্যের আগেই সম্পন্ন হবে বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে, যার মানে ভারতীয় চুক্তির সময়সীমা আরও কম হতে পারে। এই ধারাবাহিক চুক্তিগুলো মূলত চীনকে কৌশলগতভাবে আলাদা করে রাখার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত, কারণ চীনের ওপর কিছুক্ষেত্রে ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
চীন পাল্টা শুল্ক আরোপ ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ রপ্তানি বন্ধের মতো পদক্ষেপ নিয়েছে। অপরদিকে ভারত অপেক্ষাকৃত নীরবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় মনোনিবেশ করেছে। এমনকি শুল্ক আরোপের আগেই ভারত ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছিল। এজন্য ভারত সরকার দাবি করেছে যে, ভারতের ওপর শুল্ক আরোপ যৌক্তিক ছিল না।
তবে, ‘পারস্পরিক শুল্ক’ নীতির আওতায় ভারতকে সর্বোচ্চ শুল্কযুক্ত দেশগুলোর মধ্যে রাখা হয়েছে—২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যেখানে ভিয়েতনামের ওপর ৪৬ শতাংশ, তাইওয়ানের ওপর ৩২ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর ২৬ শতাংশ এবং জাপানের ওপর ২৪ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে এই শুল্ক মাত্র ১০ শতাংশ।
এদিকে, ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল সম্প্রতি Firstpost–এ একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “ভারত এমন দেশ নয় যার ওপর শুল্ক আরোপ করা উচিত ছিল, কারণ আমরা আগেই দ্বিপাক্ষিক চুক্তির পথে এগোচ্ছিলাম।” তবে গোয়েল জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তিটি আগামী শরতের মধ্যেই সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।