তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ান শুক্রবার গাজায় ইসরায়েলের লাগাতার সামরিক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং ইসরায়েল সরকারকে নির্বিচারে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করেছেন। একই সঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতাকেও সমালোচনা করেছেন।
ইস্তানবুলে ফিলিস্তিন সমর্থিত একটি সংসদীয় গ্রুপের বৈঠকে এরদোয়ান বলেন,
"চূড়ান্ত উন্মত্ততায় ইসরায়েলি সরকার ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে হত্যা করছে।"
তিনি গাজায় নারীদের, শিশুদের, চিকিৎসক, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সাহায্যকর্মীদের প্রাণহানির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন,
"এটি শুধু একটি ভূমি বা জনগণের সমর্থনের প্রশ্ন নয়, এটি ন্যায়বিচার, শান্তি ও মানবতার পক্ষে দাঁড়ানোর লড়াই।"
"মানবতার লড়াই, শুধু মুসলমানদের বিষয় নয়"
এরদোয়ান বলেন, ফিলিস্তিনি সংকট শুধুমাত্র মুসলমানদের নয়, বরং প্রতিটি বিবেকবান মানুষের বিষয়।
"এই লড়াইটা মানুষের হয়ে মানুষ থাকার সংগ্রাম।"
তিনি জানান, গাজায় জনসংখ্যার ৭% এর বেশি মানুষ নিহত বা পঙ্গু হয়েছেন, ২১২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, সহস্রাধিক চিকিৎসক, নার্স, সাহায্যকর্মীকে টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছে।
"কিছু দিন আগে এক নারী সাংবাদিককে তার ১০ জন পরিবারের সদস্যসহ হত্যা করা হয়েছে। শিশুদের ওষুধ, পানি ও খাবারের অভাবে চোখের সামনে মরতে হয়েছে।"
পশ্চিমাদের দ্বিচারিতা
এরদোয়ান পশ্চিমা দেশগুলোকে অভিযুক্ত করে বলেন,
"সামান্য কিছু ঘটলেই তারা অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কিন্তু ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোথায় তারা?"
তিনি জানান, ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০,০০০ ফিলিস্তিনিকে 'নৃশংসভাবে হত্যা' করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গাজার ৮০% ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
"নির্বাসনের প্রস্তাব মূল্যহীন"
এরদোয়ান বলেন, ফিলিস্তিনিদের হাজার বছরের বাসভূমি থেকে বিতাড়নের যেকোনো প্রস্তাব "আমাদের কাছে মূল্যহীন"।
তিনি ইসরায়েলের কৃতকর্মকে "শতাব্দীর অন্যতম বড় ডাকাতি" বলে আখ্যা দেন এবং বলেন,
"যারা গাজার গণহত্যার প্রতি নীরব, তারা এই হত্যাকাণ্ডকে স্বাভাবিক করতে চাইছে, প্রতিরোধকে সন্ত্রাসবাদ আখ্যা দিয়ে।"
শেষে তিনি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গাজায় চলমান সহিংসতা বন্ধে জোরালো ও মানবিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।