
১৩২ বছরের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করতে পারবেন ট্রাম্প?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে এখন নতুন ইতিহাস গড়ার হাতছানি। ১৩২ বছর পর ট্রাম্পই প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট যিনি পরাজিত হওয়ার পর আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এবারের নির্বাচনে কমলা হ্যারিসকে হারাতে পারলে ইতিহাসের পাতায় গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের পাশে যুক্ত হবে ট্রাম্পের নাম। কেননা এর আগে শুধুমাত্র গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডই একবার হেরে যাওয়ার পর আবারো নির্বাচন করে জয়ী হন।
রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
একবারের পরাজয়ের পর আবারও নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘটনা মার্কিন ইতিহাসে বিরল। ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি এবার নির্বাচিত হন, তবে তিনি একজন ঐতিহাসিক প্রেসিডেন্ট হবেন।
১৩২ বছর আগে মার্কিন রাজনীতির ইতিহাসে শুধুমাত্র গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের ঝুলিতেই এমন অর্জন আছে।ক্লিভল্যান্ড ১৮৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এরপর ১৮৮৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নেন তিনি।
ক্লিভল্যান্ড সে নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী বেঞ্জামিন হ্যারিসনের কাছে হেরে যান। পরবর্তীতে ১৮৯২ সালে আবার নির্বাচনে অংশ নেন। হ্যারিসনকে হারিয়ে আবারও হোয়াইট হাউজের ক্ষমতায় বসেন ক্লিভল্যান্ড। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ২২তম ও ২৪তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
গ্রোভারের মতো, ১৯১২ সালে সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট নতুন দল দি প্রগ্রেসিভ পার্টির পক্ষ থেকে তৃতীয় দফায় নির্বাচনে অংশ নেন কিন্তু ডেমোক্র্যাটিক পার্টির উইড্রো উইলসনের কাছে হেরে যান।
ট্রাম্পের নির্বাচনী দৌড়ের হিসেবটাও এখন পর্যন্ত ক্লিভল্যান্ড-থিওডোরের মতই। নির্বাচনের ফলাফলের পর আসল পার্থক্য বোঝা যাবে। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে, পরের নির্বাচনে হেরে যান। এবার তৃতীয় দফায় এ বছর আবার অংশ নিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প জিতে গেলে ক্লিভল্যান্ডের মতো ইতিহাস গড়বেন আর যদি হেরে যান তবে থিওডোরের নামের পাশে নাম লেখাবেন।
কাকতালীয়ভাবে ট্রাম্প আর ক্লিভল্যান্ডের আদর্শ অনেকটা একইরকম। দুইজনই বিশ্বজুড়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ এবং যুদ্ধের জন্য কম অর্থ ব্যয় করতে চান। আবার দুই সাবেক প্রেসিডেন্টের অর্থনৈতিক নীতি একই রকম। গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধেই মিথ্যা কথা বলার অভিযোগ উঠে।
যেমন ভিয়েতনামে সামরিক একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এড়াতে ট্রাম্প অসুস্থ হওয়ার মিথ্যা দাবি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এদিকে, গৃহযুদ্ধের সময় গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডও নিজের পরিবর্তে আরেকজন সেনাকে বিকল্প সেনা হিসেবে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠান বলে জানা যায়। এসব কারণেই দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউজের দায়ভার জনগণ ট্রাম্প বা ক্লিভল্যান্ডকে দেয়নি বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকদের মতে, ক্লিভল্যান্ড ও ট্রাম্প উভয় সাবেক প্রেসিডেন্টেরই প্রথম মেয়াদকাল বিতর্কিত ছিল। তবে সেসব বিতর্ক ছাপিয়েই তৃতীয় দফায় নির্বাচিত হন গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড।
তবে কি ট্রাম্প তৃতীয় দফায় জনগণের আস্থা অর্জন করে আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ১৩২ বছরের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করতে পারবেন? যদি ট্রাম্প সফল হন, তবে রিপাবলিকান কোনো প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম এই অর্জনের তালিকায় নাম লেখাবেন।