ঢাকাসোমবার , ২১ এপ্রিল ২০২৫
  1. Global News
  2. অপরাধ
  3. অভিযোগ
  4. অর্থনীতি
  5. আইন-বিচার
  6. আটক
  7. আন্তর্জাতিক
  8. আবহাওয়া
  9. কৃষি-সংবাদ
  10. খেলা-ধুলা
  11. জাতীয়
  12. জীবনযাত্রা
  13. ধর্ম
  14. প্রবাস প্রযুক্তি
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পদ্মা নদীতে জাটকা শিকারের অনুমতি দেয় নৌ-পুলিশ!

শরীয়তপুর প্রতিনিধি:
এপ্রিল ২১, ২০২৫ ১:৩১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

শরীয়তপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীজুড়ে চলছে অবৈধ মাছ শিকার, আর এতে সহযোগিতা করছে নৌপুলিশ—এমন অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে জেলার জেলে পল্লীগুলো। অভিযোগ রয়েছে, প্রতি নৌকা থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে নৌপুলিশ কিছু জেলেকে মাছ ধরার অনুমতি দিচ্ছে, যদিও এ সময়ে মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ২৫ সেন্টিমিটারে নিচে ইলিশ শিকার, পরিবহন, বিক্রি, বাজার জাতের ওপর সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। অথচ এ আইন মানছেন না অসাধু জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ সময়েও দেখা যায় অহরহ মাছ শিকারের দৃশ্য। দিনের আলোয় তুলনামূলক ভাবে কম দেখা গেলেও রাতের আঁধারে নদী থাকে জেলেদের দখলে। সকালে নদীর তীরে সারি সারি নৌকায় ভর্তি মাছ আর এসব মাছ বিক্রি করা হচ্ছে আড়তগুলোতে।

এতো কড়াকড়ি অভিযানে কি ভাবে ধরেন জাটকা ইলিশ। বিষয়টি জানতে গতকাল শনিবার রাতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। রাত ৮ থেকে ভোর ৬ টা পর্যন্ত নদীতে প্রায় শত,শত জেলকে মাছ ধরতে দেখা যায়। জেলেদের হিসাব মতে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় যেমন কাচিকাটা, দুলারচর নতুন বাজার,উত্তর তারাবুনিয়া, দক্ষিণ তারাবুনিয়া, কুবুদ্ধির ঘাট, বন্দুছি বাজার, সুরেশ্বর বাংলা বাজার, চরআত্রা নওপাড়া, কোদালপুর লঞ্চঘাট, কুচাইপট্টি বটতলা, ঈশানবালা,,কুন্ডের চর সহ প্রায় ৩০ টি পয়েন্টে পাঁচশ জেলে নিয়মিত প্রকাশ্যে কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে জাটকা ইলিশ ধরছেন। এসব জেলেদের বড় একটি অংশ নৌপুলিশকে প্রতিদিন নৌকা প্রতি টাকা দিয়ে মাছ শিকার করেন বলে অভিযোগ স্থানীয় জেলেদের।

স্থানীয় জেলে মো. হানিফ মিয়া বলেন, “নদীতে নামতে হলে আগে নৌপুলিশকে টাকা দিতে হয়। না দিলে ধরে নিয়ে যায়, মামলা দেয়। যারা টাকা দেয়, তারা নির্বিঘ্নে মাছ ধরতে পারে।” আমরা টাকা দিয়ে নৌপুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে মাছ ধরছি। আমাদের প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা নৌপুলিশকে দিতে হয়। আমরা জেলে মানুষ বৈধ-অবৈধ বুঝি না। কোদালপুর লঞ্চঘাট এলাকার কাশেম ভূইয়া নামে এক জেলে বলেন, আমাদের প্রতি নৌকায় বিশ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয় নৌপুলিশকে, যা প্রতিমাসে আদায় করা হয়। এমনকি কোথায় কবে অভিযান হবে, সে তথ্যও আগেই জানিয়ে দেয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। টাকা না দিলে নৌপুলিশ এসে ধরে নিয়ে যায়।

জসিম দেওয়ান নামে আরও এক জেলে বলেন, নৌপুলিশের দালাল শওকতের মাধ্যমে প্রতিদিন নরসিংহপুর ও সুরেশ্বর ফাঁড়ীকে নৌকা প্রতি ৩০০ টাকা দেই। আমার পাঁচটি জেলে নৌকা রয়েছে এতে প্রতিদিন নৌপুলিশকে ১৫০০ টাকা দিতে হয়। কি করবো বলেন টাকা না দিলে ধরে নিয়ে যায়। জাটকা ধরা বিক্রি অবৈধ এটা আমরাও জানি গরীব মানুষ কি করে খাবো। আমাদের সরকার যে-ই সহযোগিতা দেয় তা আমরা ঠিক মতো পাই না। তাই বাধ্য হয়েই এই কাজ করি।

স্থানীয় আড়তদার রাব্বি আকন বলেন “আমরা প্রতিদিন দেখছি কিভাবে রাতে বা ভোরে মাছ ধরছে কিছু জেলে। অথচ অন্যরা পুলিশের ভয়ে নদীতে নামতে পারে না। এটা স্পষ্ট যে কিছু কর্মকর্তার মদতেই চলছে এসব।” নৌপুলিশ টাকা নেওয়ার কারণে অসাধু জেলারা নদীতে নামার সাহস পায়। ওনারা কঠোর হলে রোধ করা যাবে অবৈধভাবে জাটকা ধরা ও বিক্রি। আমরা জাটকা ধরা এবং বিক্রি কোনটাই চাই না। দুর্নীতিবাজ প্রশাসন না থাকলে আমাদের ইলিশের সংখ্যা বাড়বে পাশাপাশি কমদামে ইলিশ কিনতে পারবে সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, এভাবে ঘুষ দিয়ে মাছ ধরার অনুমতি চলতে থাকলে ইলিশের প্রজনন হুমকির মুখে পড়বে এবং প্রকৃত জেলেরা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এই অনিয়ম বন্ধে সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জেলার সাধারণ মানুষ।

এদিকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে নৌপুলিশের সুরেশ্বর ও নরসিংহপুর ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই কর্মকর্তা বলেন, “আমরা নিয়ম অনুযায়ী কাজ করছি। কেউ যদি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, প্রমাণ থাকলে তদন্ত হবে।” আপনি ফাঁড়ীতে এসে দেখা করে “চা” খেয়ে যাবেন।

এ ব্যাপারে জানতে নৌ-পুলিশের চাঁদপুরের অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমানকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। তাকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মেসেজ দিলেও তিনি এবিষয়ে কথা বলতে চায় নি।

In addition to creating news on this site, we collect news from various news sites and publish it with relevant sources. Therefore, if you have any objections or complaints about any news, you are requested to contact the authorities of the relevant news site. It is illegal to use news, photographs, audio and video from this site without permission.