
মানিকগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক বেতিলা জমিদার বাড়ি, সদর থানায় বেতিলা মিত্রা ইউনিয়নে অবস্থিত।
বেতিলা জমিদার বাড়ির সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে তেমন কিছু বলতে পারেনা, তবে স্থানীয় লোকজনের তথ্য অনুযায়ী, এই জমিদার বাড়ির পূর্বপুরুষ ছিলেন জ্যোতি বাবু নামের এক কলকাতার বণিক, যিনি পাটের ব্যবসা করতেন।
ধারণা করা হয়, ১৮৮৬ সালে এই এলাকার পাটের ব্যবসার সুবিধার জন্য তিনি বেতিলা খালকে ব্যবহার করে এখানে বসতি স্থাপন করেন
এবং এই বিশাল দালান কোঠা নির্মাণ করেন।
স্থানীয়দের কাছে এটি “সত্য বাবুর বসতবাড়ি” নামেও পরিচিত।
দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান এবং স্ত্রী কে নিয়ে আসেন।
বেতিলা খাল একসময় ধলেশ্বরী ও কালিগঙ্গা নদীর সাথে সংযুক্ত ছিল এবং এটি একটি নিরাপদ নৌপথ হিসেবে ব্যবহৃত হত, যা বণিকদের জন্য সুবিধাজনক ছিল।
বেতিলা জমিদার বাড়ি দুটি পাশাপাশি
অবস্থিত দোতলা ভবনের সমন্বয়ে গঠিত। এর স্থাপত্যে ইউরোপীয় প্রাসাদের আদল এবং বারোক সজ্জা দেখা যায়। ভবনের পলেস্তারার উপর বিস্তারিত চিত্রকলা চোখ ধাঁধানো। যদিও এর স্থাপত্যশৈলী ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়ির মত, কিন্তু এতে ইউরোপীয় প্রভাব স্পষ্ট।
বর্তমানে বেতিলা জমিদার বাড়ি সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যদিও এটি সরকারি ব্যবস্থাপনায় আছে, তবে এর অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। অযত্ন ও অবহেলার ছাপ স্পষ্ট। তবে এর স্থাপনা এখনও যথেষ্ট মজবুত রয়েছে।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে বেতিলা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত অটো-রিকশা বা অন্যান্য যানবাহনে যাওয়া যায়। বেতিলা বাজার থেকে অটো-রিকশায় করে সহজেই জমিদার বাড়ি পৌঁছানো যায়।
বেতিলা জমিদার বাড়ি যদিও একটি জমিদার বাড়ি হিসেবে পরিচিত, তবে এটি মূলত একজন বণিক পরিবারের বসতবাড়ি ছিল। এর অস্পষ্ট ইতিহাস এবং বর্তমান বেহাল দশা সত্ত্বেও, এটি মানিকগঞ্জের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে বিবেচিত।