
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি দিদার আহমেদ মোল্লার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মাদক সংশ্লিষ্ট কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। খিলক্ষেত থানাধীন ডুমনি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দিদার আহমেদ দলের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, জমি দখল, মাদক কারবার ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা বলেন, “সম্প্রতি খিলক্ষেত থানা পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে বেশ কিছু মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। এই অভিযানে সহায়তা করা অনেক নেতাকর্মীকেই পরবর্তীতে দিদার হুমকি দিয়েছেন।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় নতুন ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে হলে দিদারের সিন্ডিকেটকে চাঁদা দিতে হয়। তার রয়েছে একটি নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী, যারা দিদারের পক্ষে চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
সম্প্রতি খিলক্ষেত থানা পুলিশ ২৫ কেজি বাংলা মদ, ইয়াবা ও গাঁজাসহ একজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে। অভিযোগ রয়েছে, ওই ব্যবসায়ীকে ছাড়াতে থানায় ছুটে যান বিএনপি নেতা দিদার আহমেদ। তবে, ওসি দিদারকে অপমান করে থানার বাইরে বের করে দেন। এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করছে—আটককৃত মাদক কারবারি দিদারের লোক কি না।
ডুমনি বাজারের এক চা দোকানি বলেন, “দিদার আমাদের চোখের সামনে বড় হয়েছে, তেমন লেখাপড়া করেনি। আগে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে চলাফেরা করতো, আমার দোকানেও আসতো। এখন বিএনপির বড় নেতা! অটো স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে এলাকাজুড়ে ওর লোকজন ভয়ভীতি দেখায়। বিএনপি এখনো ক্ষমতায় আসেনি, অথচ এখনই সে দলের ‘পাওয়ার’ দেখিয়ে এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে।”
আরেকজন স্থানীয় বলেন, “দিদার আগে ভালো ছিল। এখন শোনা যায় মাদক, জুয়া আর নারীদের নিয়ে হোটেলে নাচ-গানের আসর বসায়।”
এ বিষয়ে খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, “আমরা একজন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছি, যাকে ছাড়াতে বিএনপি নেতা দিদার আহমেদ থানায় এসেছিলেন। তার বিরুদ্ধে কিছু মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তবে লিখিতভাবে কেউ এখনো কিছু জানায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।”
এলাকাবাসীর দাবি, সুষ্ঠু তদন্ত করে দিদার আহমেদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, যেন এলাকাজুড়ে শান্তি ফিরে আসে