
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নতুন আমদানি শুল্ক নীতি বাস্তবায়নের জন্য ২ এপ্রিলকে ‘মুক্তি দিবস’ ঘোষণা করেছেন। তার দাবি, এই শুল্ক আমেরিকাকে বিদেশি পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে মুক্ত করবে। তবে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এসব পদক্ষেপ বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
কী ঘটতে যাচ্ছে ২ এপ্রিল?
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, ট্রাম্প তার ‘প্রত্যাবর্তনমূলক’ (Reciprocal) শুল্ক নীতির বিস্তারিত ঘোষণা দেবেন। এতে বিশ্বের প্রায় সব মার্কিন বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা রয়েছে। শুল্কের হার কীভাবে নির্ধারিত হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। এটি দেশভেদে পৃথকভাবে নির্ধারণ করা হতে পারে অথবা গড় হিসাবেও কার্যকর করা হতে পারে।
কোন কোন পণ্যে নতুন শুল্ক?
• ভেনেজুয়েলা থেকে তেল বা গ্যাস আমদানি করা দেশগুলোর জন্য ২৫% শুল্ক
• ৪ এপ্রিল থেকে আমদানি করা গাড়ির ওপর ২৫% শুল্ক
• মে মাসের মধ্যে গাড়ির যন্ত্রাংশেও নতুন শুল্ক
• চীনা পণ্যের ওপর পূর্বের ১০% শুল্ক বাড়িয়ে ২০% করা হয়েছে
• স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫% শুল্ক ইতিমধ্যেই কার্যকর
বিশ্ববাজারে প্রতিক্রিয়া ও সম্ভাব্য পাল্টা ব্যবস্থা
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতি পণ্যের দাম বাড়িয়ে তুলবে, যা আমেরিকান ভোক্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। ইতিমধ্যে চীন, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছে।
• চীন আমেরিকান কয়লা, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ও কৃষিপণ্যে ১৫% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে।
• ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২৬ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের আমেরিকান পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, যার মধ্যে বিফ, পোল্ট্রি, বার্বন হুইস্কি, মোটরসাইকেল ও ডেনিম অন্তর্ভুক্ত।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২ এপ্রিলের ঘোষণা বাণিজ্যযুদ্ধকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমছে এবং বাজারে অস্থিরতা বাড়ছে। এখন দেখার বিষয়, নতুন শুল্ক আরোপের পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কী পরিবর্তন আসে।