
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০২৪ সালের নির্বাচনকে ঘিরে কামালা হ্যারিসকে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাননি এবং তাঁর জয়ের সম্ভাবনায় আস্থা রাখেননি। নতুন একটি বইয়ে এ সংক্রান্ত বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে।
“FIGHT: Inside the Wildest Battle for the White House” শীর্ষক বইটির লেখক এনবিসি নিউজের জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক প্রতিবেদক জনাথন অ্যালেন এবং দ্য হিলের জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক সংবাদদাতা অ্যামি পার্নেস জানান, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন নির্বাচনী দৌড় থেকে সরে দাঁড়ান, তখন ওবামা চাইছিলেন হ্যারিস যেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রার্থী না হন। বরং তিনি একটি খোলা মনোনয়ন প্রক্রিয়ার পক্ষে ছিলেন, যাতে ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতরে প্রতিযোগিতা হয়।
মঙ্গলবার এমএসএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যালেন বলেন, “ওবামা মনে করতেন না যে বাইডেনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা চালিয়ে যাওয়া উচিত, কিন্তু তিনি হ্যারিসকেও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে দেখেননি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পর্দার আড়ালে একটি ‘মিনি-প্রাইমারি’ বা উন্মুক্ত সম্মেলনের পক্ষে কাজ করছিলেন।”
শেষ মুহূর্তে সমর্থন দিলেও আস্থা ছিল না
বইটিতে দাবি করা হয়েছে, ওবামা বাইডেনের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার দিনই হ্যারিসের সঙ্গে কথা বললেও তাঁকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেননি। এমনকি সেই সময় কংগ্রেসম্যান জেমস ক্লাইবার্নের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন, যাতে ডেমোক্রেটিক দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করা যায়।
তবে শেষ পর্যন্ত, বাইডেন যখন আনুষ্ঠানিকভাবে হ্যারিসকে সমর্থন করেন, তখন পাঁচ দিন পর ওবামা ও তাঁর স্ত্রী মিশেল ওবামাও তাঁকে সমর্থন জানান।
বাইডেনের নির্দেশ: ‘কোনো ফাঁকফোকর রাখা যাবে না’
বইটিতে আরও বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেন চাইতেন হ্যারিস তাঁর প্রশাসনের সিদ্ধান্তের সঙ্গে পুরোপুরি একমত থাকুন এবং জনসমক্ষে কোনো ভিন্নমত না জানান। বিশেষ করে বিতর্ক অনুষ্ঠানের আগের দিন বাইডেন হ্যারিসকে ফোন করে বলেন, “No daylight, kid”—অর্থাৎ বাইডেন ও হ্যারিসের অবস্থানের মধ্যে যেন কোনো ফাঁক না থাকে।
এ সিদ্ধান্ত হ্যারিসের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, কারণ নির্বাচনী প্রচারের সময় তিনি বাইডেন প্রশাসন থেকে নিজেকে আলাদা করে দেখানোর সুযোগ পাননি।
এই নতুন বইতে উঠে আসা তথ্য ইতিমধ্যেই মার্কিন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় তুলেছে। তবে ওবামা ও হ্যারিসের অফিস থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য আসেনি।