
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ডন এর প্রতিবেদনে বলা হয়- পাকিস্তানের করাচীতে রোববার হাজার হাজার মানুষ ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বিশাল বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ মিছিল আয়োজন করে দেশটির প্রধান ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল জামাত-ই-ইসলামী।
এই বিক্ষোভ ছিল ইসরায়েলের সর্বশেষ গাজা হামলা শুরু হওয়ার পর পাকিস্তানে আয়োজিত সবচেয়ে বড় জনসমাবেশগুলোর একটি। স্থানীয় টিভি চ্যানেল জিও নিউজ জানিয়েছে, বিক্ষোভে বিপুলসংখ্যক নারীর উপস্থিতিও লক্ষ করা গেছে।
মূলত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কাছে বিক্ষোভ আয়োজনের পরিকল্পনা থাকলেও, জামাত-ই-ইসলামী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের আলোচনার পর স্থান পরিবর্তন করে রাজধানীর জিরো পয়েন্টে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে ফিলিস্তিন ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে দুই পাশের সড়ক ভরে ফেলে বিক্ষোভকারীরা। তারা ‘ইসরায়েল নিপাত যাক’, ‘আমেরিকা নিপাত যাক’, এবং ‘লাব্বাইক ইয়া গাজা’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
জামাত-ই-ইসলামীর আমির হাফিজ নাঈমুর রহমান বলেন,
“আমরা সরকারের বা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ চাই না। তবে মনে রাখতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধু নয়—তারা সেই জায়নিস্ট শাসনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, যারা গাজায় হাজার হাজার নিরস্ত্র নারী ও শিশুকে হত্যা করেছে।”
তিনি আরও বলেন,
“যেসব আরব শাসক আমেরিকাকে খুশি করার জন্য ইসরায়েলের অপরাধের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন না, তারা ভুলে গেলে চলবে না—তারা নিজেরাও ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য।” চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি
ইসরায়েলি বাহিনী ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে, এবং ইতোমধ্যে ১,৮২৭ জনকে হত্যা করেছে। এই হামলা ১৯ জানুয়ারির যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তিকে চূর্ণ করে দিয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৫১,২০০-র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গত নভেম্বরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্তের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও চলছে।