
গ্রিনল্যান্ড । ২৯ মার্চ — যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স শুক্রবার গ্রিনল্যান্ড সফরে এসে ডেনমার্ককে তীব্র সমালোচনা করেন, দাবি করেন যে ডেনমার্ক গ্রিনল্যান্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি এবং রাশিয়া ও চীনের মতো আগ্রাসী দেশগুলোর হস্তক্ষেপ থেকে গ্রিনল্যান্ডের জনগণকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ভ্যান্স গ্রিনল্যান্ডের সামরিক ঘাঁটি পিটুফিক পরিদর্শনকালে বলেন, “ডেনমার্ক যথেষ্ট সম্পদ এবং মনোযোগ ব্যয় করেনি এই ঘাঁটি রক্ষা করতে, আমাদের সৈন্যদের রক্ষা করতে, এবং আমার মতে, গ্রিনল্যান্ডের জনগণকে রক্ষা করতে,” তবে তিনি এসব হস্তক্ষেপের বিস্তারিত তথ্য দেননি।
ভ্যান্স আরও বলেন, রাশিয়া, চীন এবং অন্যান্য দেশগুলি আর্কটিক অঞ্চলের নৌপথ, জলপথ এবং খনিজসম্পদে “অসাধারণ আগ্রহ” দেখাচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্র সেখানে আরও সামরিক সম্পদ, নৌযান এবং আইসব্রেকার পাঠাবে, যার ফলে তাদের উপস্থিতি আরও বাড়ানো হবে।
গ্রিনল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইউএস সফরকে “অসন্মান” হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং বাইরের চাপের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ডেনমার্কের রাজা ফ্রেডেরিক সামাজিক মাধ্যমে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, “আমরা একটি পরিবর্তিত বাস্তবতায় বসবাস করছি। গ্রিনল্যান্ডের প্রতি আমার ভালোবাসা এবং গ্রিনল্যান্ডের জনগণের সাথে সংযুক্তি অটুট রয়েছে।”
ভ্যান্স তার সফরের সময় পিটুফিকের ইউএস সামরিক ঘাঁটিতে সৈন্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের সেবার জন্য ধন্যবাদ জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই সফরের সময় বলেন, “আমরা গ্রিনল্যান্ডকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করি, এটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য।” তিনি আরও বলেন, “গ্রিনল্যান্ডের জলপথে চীনা এবং রুশ জাহাজের উপস্থিতি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমেরিকা নিজেই পদক্ষেপ নেবে, ডেনমার্ক বা অন্য কোনও দেশের উপর নির্ভর করবে না।”
এ সফরের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ এবং শক্তি মন্ত্রী ক্রিস রাইটসহ ভ্যান্সের স্ত্রী উষাও উপস্থিত ছিলেন। যদিও প্রথমে পরিকল্পনা ছিল উষা একটি কুকুর-স্লেড রেস পরিদর্শন করবেন, তবে গ্রিনল্যান্ড ও ডেনমার্কের কর্তৃপক্ষের আপত্তির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল শুধু সামরিক ঘাঁটিতে গিয়ে সীমাবদ্ধ থাকে এবং জনসাধারণের সাথে সাক্ষাৎ করেনি।
১৯৫১ সালের চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র তার সামরিক ঘাঁটিতে যে কোনও সময় পরিদর্শন করতে পারে, তবে পূর্বে গ্রিনল্যান্ড এবং কোপেনহেগেনকে অবহিত করতে হবে। পিটুফিক ইউরোপ থেকে উত্তর আমেরিকা যাওয়ার সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত পথের পাশে অবস্থিত এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যালিস্টিক মিসাইল সতর্কতা ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।