
উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত মিয়ানমারে শক্তিশালী ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের ফলে মৃতের সংখ্যা ৬৯৪-এ পৌঁছেছে এবং উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে পড়া জীবিতদের খুঁজে বের করার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ভূমিকম্পটি মিয়ানমারের সাগাইং শহরের উত্তরে আঘাত হানে এবং এর পরপরই ৬.৭ মাত্রার একটি আফটারশক অনুভূত হয়।
এ ভূমিকম্পের ফলে মিয়ানমারের ব্যাপক অঞ্চলে ভবন ধ্বংস, সেতু ভেঙে পড়া এবং রাস্তাঘাটের ক্ষতি হয়। বিশেষ করে ম্যান্ডালয় শহর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা জানায়, এই ভূমিকম্পে ৬৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১,৭০০ এরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
এছাড়া, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে নির্মাণাধীন একটি ৩০ তলা ভবন ধ্বসে পড়ায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শতাধিক নির্মাণ শ্রমিক এখনো নিখোঁজ। ব্যাংককের চাটুচাক মার্কেটের কাছাকাছি এই ভবনটি ধ্বংস হয়ে গেলে স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধারকাজ শুরু করে এবং প্রায় ১০০ জন শ্রমিকের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ব্যাংকক গভর্নর চাডচার্থ সিটিপুন্ত জানান, “আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি এবং প্রতিটি জীবন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।” উদ্ধারকর্মীরা জানাচ্ছেন, শহরের বিভিন্ন ভবনে ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য এবং ২,০০০টিরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের রিপোর্ট এসেছে।
মিয়ানমারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ম্যান্ডালয়ে, যেখানে হাসপাতাল এবং হোটেলসহ বহু ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও জরুরি পরিষেবা সঙ্কটজনক হয়ে পড়েছে, কারণ চার বছরের গৃহযুদ্ধের পর এসব ব্যবস্থা অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন আং হ্লেইং আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য আবেদন করেছেন, যা এই মহাসংকটের গুরুত্ব প্রমাণ করছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ছয়টি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে এবং রাজধানী নেপিদোতে এক হাসপাতালের বাইরে আহতদের চিকিৎসা করা হচ্ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, যেমন ভারত, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সাহায্য প্রেরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও দেশটির প্রতি সাহায্য পাঠানোর কথা জানিয়েছেন এবং বলেন, “এটি একটি ভয়াবহ দুর্যোগ এবং আমরা সাহায্য প্রদান করব।”
এই ভূমিকম্পের পরের দিনগুলোতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে এবং উদ্ধার কাজ চলছে