
উদ্ধার অভিযান চলছে ব্যাংকক — শুক্রবার (মার্চ ২৮, ২০২৫) মিয়ানমার এবং প্রতিবেশী থাইল্যান্ডে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, যা অনেক ভবন, সেতু এবং একটি বাঁধ ধ্বংস করেছে। মিয়ানমারে অন্তত ১৪৪ জন নিহত হয়েছে, যেখানে দুটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শহরের ছবি এবং ভিডিও থেকে ব্যাপক ক্ষতির চিত্র ফুটে উঠেছে। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে একটি নির্মাণাধীন উচ্চবংশী ভবন ধসে পড়ে, সেখানে অন্তত আটজন মারা গেছে।
৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল মিয়ানমারের ম্যান্ডালয়ের কাছে, মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। ভূমিকম্পটি দুপুর ১২টার দিকে আঘাত হানে এবং পরে ৬.৪ মাত্রার একটি শক্তিশালী আফটারশক অনুভূত হয়।
মিয়ানমারের সামরিক সরকারের প্রধান শুক্রবার সন্ধ্যায় টেলিভিশনে ভাষণে জানিয়েছেন যে অন্তত ১৪৪ জন নিহত এবং ৭৩০ জন আহত হয়েছে। “মৃত্যুর সংখ্যা এবং আহতদের সংখ্যা বাড়তে পারে,” সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেন। রাজধানী নায়পিদওয়ের ছবি থেকে জানা গেছে যে, একাধিক সরকারি ভবন ধ্বংস হয়েছে এবং উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে মরদেহ উদ্ধার করছেন।
মিয়ানমারের সরকার জানিয়েছে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে রক্তের সংকট রয়েছে। ম্যান্ডালয়ে এবং বিভিন্ন স্থানে ভেঙে পড়া রাস্তাঘাট এবং সেতু উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, কারণ উদ্ধারকর্মীরা কিছু কিছু এলাকায় পৌঁছাতে অক্ষম হতে পারে। এই ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ইতিমধ্যে চলমান মানবিক সংকটকে আরও তীব্র করেছে।
ব্যাংকক:
ব্যাংককের জনপ্রিয় চাতুচাক মার্কেটের কাছে একটি ৩৩ তলা নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়ে, যেখানে ৮১ জন trapped হয়ে পড়েছে। এতে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছে এবং ৯০ জন নিখোঁজ রয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা এখনও উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে, অন্যান্য এলাকা থেকে মানুষকে ভবনগুলি থেকে বের করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ভূমিকম্পের কারণে ব্যাংককের কেন্দ্রস্থলে সাইরেনের শব্দ শোনা যায় এবং যানবাহনগুলি রাস্তায় জমা হয়ে পড়ে। শহরের বেশ কিছু এলাকা ব্ল্যাকআউটের মুখোমুখি হয়। থাইল্যান্ডের সরকার ভূমিকম্পের ক্ষতিপূরণে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
মিয়ানমারে অবস্থা:
ম্যান্ডালয়ে, ভূমিকম্পটি একাধিক ভবন, মন্দির এবং প্রাক্তন রাজার প্রাসাদকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এছাড়া, একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে জলস্তরের বৃদ্ধি ঘটে এবং নিম্নভূমি এলাকার জন্য এটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। গ্রামাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, যার ফলে অনেক অঞ্চল উদ্ধারকর্মীদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চীনেও ভূমিকম্পের প্রভাব:
ভূমিকম্পটি চীনের ইউনান এবং সিচুয়ান প্রদেশেও অনুভূত হয়েছে। রুইলি শহরের কাছে বাড়ি এবং অন্যান্য স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কিছু মানুষ আহত হয়েছে। চীনের মিডিয়া জানিয়েছে, রুইলি শহরের রাস্তায় ধ্বংসস্তূপ পড়ে এবং অনেক মানুষ আহত হয়েছে।