
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আসা অন্যান্য দেশের পণ্যগুলোর ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করবেন, যা তার দ্বিতীয় প্রশাসনের শুরুর দিকের বাণিজ্যযুদ্ধকে আরও তীব্র করবে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) হোয়াইট হাউস রোজ গার্ডেনে এক ইভেন্টে ট্রাম্প তার ঘোষণার সময় একটি পোস্টার প্রদর্শন করেন, যেখানে পাল্টা শুল্কের তালিকা ছিল। এই তালিকায় বাংলাদেশের ওপর ৩৭% শুল্ক আরোপ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের জন্য ২৬%, চীনের জন্য ৩৪%, এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য ২০% শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও, তিনি ১০% একটি বেসলাইন শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করেছেন যা সমস্ত আমদানি পণ্যের ওপর প্রযোজ্য হবে।
এই পদক্ষেপটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা অর্থনীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন ধরনের বাণিজ্য বাধার সম্মুখীন করবে, যা বাণিজ্য মুক্তির দশকগুলোকে পেছনে ফেলবে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য শৃঙ্খলাকে নতুনভাবে আকার দিতে পারে।
ট্রাম্প এসময় বলেছেন, “এটি আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র।” তিনি আরো জানান, এই নতুন শুল্কের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য উৎপাদন খাত পুনরুজ্জীবিত হবে এবং দেশীয় শিল্পে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এছাড়াও, এই ঘোষণার মধ্যে পাকিস্তান, মিয়ানমার, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, কাম্বোডিয়া সহ বেশ কিছু এশীয় দেশের জন্য শুল্কের হার আরও বেশি রাখা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মিয়ানমারের জন্য ৪৪%, ভিয়েতনামের জন্য ৪৬%, এবং কাম্বোডিয়ার জন্য ৪৯% শুল্ক ধার্য করা হয়েছে।
নতুন শুল্কের ঘোষণা ছাড়াও ট্রাম্প প্রশাসন আগের ঘোষণা অনুযায়ী ৩ এপ্রিল থেকে গাড়ি আমদানির ওপর ২৫% শুল্ক এবং স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ২০% শুল্ক কার্যকর করেছে। এসব শুল্কের ফলে আমেরিকার অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে বেশ কিছু উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্ব অর্থনীতি ধীর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা এবং আমেরিকান পরিবারের জন্য জীবনযাত্রার খরচ বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে জানিয়েছেন যে, এই শুল্কগুলি বৈশ্বিক অর্থনীতিকে ধীর করতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের গড় পরিবারের জন্য হাজার হাজার ডলার খরচ বাড়াতে পারে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন যে, ট্রাম্পের শুল্কের হুমকিগুলি তাদের পরিকল্পনা করা কঠিন করে তুলছে এবং ইতিমধ্যেই সারা বিশ্বে উৎপাদন কর্মকাণ্ডে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।
বাণিজ্যিক অনিশ্চয়তার ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাম বেড়েছে এবং অনেক ভোক্তা দাম বৃদ্ধির আগে পণ্য কেনার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, এই শুল্ক ঘোষণার ফলে সত্যিই আমেরিকার অর্থনীতি লাভবান হবে, নাকি এটি অন্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক উত্তেজনা সৃষ্টি করবে এবং দাম বাড়াবে?