
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ নতুন শুল্কের ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন, যাকে তিনি ‘মুক্তি দিবস’ নামে অভিহিত করেছেন। তবে অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এসব শুল্ক পণ্যমূল্য আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন প্রায় সব প্রধান বাণিজ্য অংশীদারের ওপর ‘পারস্পরিক শুল্ক’ বসাবে। অর্থাৎ, যে দেশগুলো আমেরিকান পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে, তাদের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্র সমপরিমাণ শুল্ক বসাবে।
বিশেষ করে, বিদেশি গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা আজ মধ্যরাত থেকে কার্যকর হবে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, “এই শুল্ক আমেরিকান উৎপাদন শিল্পকে চাঙ্গা করবে, বাণিজ্য ঘাটতি কমাবে এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করবে।”
নতুন শুল্কের প্রভাব কী হবে?
শুল্ক বৃদ্ধির ফলে আমদানি করা গাড়ির দাম বেড়ে যেতে পারে, যা সাধারণ মার্কিন নাগরিকদের জন্য বাড়তি ব্যয় সৃষ্টি করবে। ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি অটোমোবাইল কোম্পানি তাদের গাড়ির মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোর মতে, নতুন শুল্ক ব্যবস্থা আমেরিকান বাজারে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দেবে এবং ভোক্তারা উচ্চ মূল্যে কেনাকাটায় বাধ্য হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের করদাতা ও ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোর নেতারা কংগ্রেস ও প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছেন, এই শুল্ক ব্যবস্থা উৎপাদন খরচ বাড়াবে এবং বাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
সমালোচনা ও প্রতিক্রিয়া
নতুন শুল্ক পরিকল্পনার সমালোচনা করে ন্যাশনাল ট্যাক্সপেয়ার্স ইউনিয়ন, স্মল বিজনেস কাউন্সিলসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন বলেছে, “এই শুল্ক নীতি যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে বাজার প্রতিযোগিতার সক্ষমতাকে দুর্বল করবে।”
অন্যদিকে, ট্রাম্প এই সমালোচনাকে গুরুত্ব না দিয়ে এনবিসি নিউজকে বলেছেন, “আমি তোয়াক্কা করি না যদি গাড়ির দাম বাড়ে, কারণ এতে মানুষ আমেরিকায় তৈরি গাড়িই কিনবে।”
শুল্ক ঘোষণার সময় ও সম্প্রচার
হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে আজ বিকেল ৪টায় ট্রাম্প ‘Making America Wealthy Again’ শীর্ষক ভাষণ দেবেন, যেখানে তিনি নতুন শুল্ক পরিকল্পনার বিস্তারিত ব্যাখ্যা করবেন। এই ঘোষণা CBS News-এর মোবাইল অ্যাপ ও অনলাইন চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে।
বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে এখনো বিশ্লেষকদের মধ্যে নানা মতবিরোধ রয়েছে। তবে আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ ভোক্তাদের জন্য এটি এক অনিশ্চিত সময়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।