
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাম এলাকায় এক মর্মান্তিক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত এবং অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার এই হামলার ঘটনা ঘটে এবং এটি গত দুই দশকের মধ্যে দেশটিতে বেসামরিক নাগরিকদের উপর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হামলা।
নিহতদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালের নাগরিক বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটে এক মনোরম পাহাড়ি উপত্যকায়, যেখানে পর্যটকেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে গিয়েছিলেন।
এ ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অর্থমন্ত্রী বিদেশ সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে এসেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় তৎপরতা শুরু হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সংগঠনগুলো পর্যটকদের উপর এই নিষ্ঠুর হামলার প্রতিবাদে বন্ধের ডাক দিয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই দ্রুত কাশ্মীর ত্যাগ করছেন।
পর্যটকদের দ্রুত সরিয়ে নিতে অতিরিক্ত ফ্লাইটের ব্যবস্থা
কাশ্মীরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগর থেকে অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী রামমোহন নাইডু জানিয়েছেন, দিল্লি ও মুম্বাইগামী বিশেষ চারটি ফ্লাইট ইতোমধ্যে চালু করা হয়েছে এবং আরও ফ্লাইট প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “বিমান ভাড়ায় যেন অতিরিক্ত চাপ না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে এয়ারলাইনগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
কাশ্মীর অঞ্চলে ১৯৮৯ সাল থেকে সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা চলমান, যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সহিংসতার হার কিছুটা কমেছে। ২০১৯ সালে ভারতের কেন্দ্র সরকার কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিল করে, যা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্কে উত্তেজনা বৃদ্ধি করে।
বিদেশি প্রতিক্রিয়া ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
পাকিস্তান সরকার এই হামলায় পর্যটকদের প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা নিরীহ মানুষের উপর এমন হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
এই হামলা গত বছরের জুন মাসে তীর্থযাত্রীদের উপর চালানো আরেকটি প্রাণঘাতী হামলার স্মৃতি আবারও তাজা করে দিয়েছে, যেখানে ৯ জন নিহত ও ৩৩ জন আহত হয়েছিলেন।
সরকারি ও বেসরকারি উভয় পর্যায়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং হামলার পেছনে কারা রয়েছে, তা খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে।