
রাজধানী ঢাকায় চারদিনব্যাপী বহুল আলোচিত ও আকাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় আক্ষেপ থাকতেই পারে, তবুও সামগ্রিকভাবে এই ইভেন্টটি বাংলাদেশে গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডের বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরির পথে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
সামিটের মূল আয়োজক ছিল বাংলাদেশ সরকার, তবে এককভাবে নয়—এই আয়োজন সফল করতে সহায়তা করেছেন মিডিয়া কমিউনিটি, প্রাইভেট সেক্টর, বিদেশি মিশন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও রাজনৈতিক দলসহ সরকারের অন্যান্য সংস্থাও।
সংখ্যায় সামিট:
• মোট উপস্থিতি (উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে): ৭১০ জন
• যার মধ্যে ৪১৫ জন ছিলেন বিদেশি বা প্রবাসী বাংলাদেশি
• ব্রেকআউট সেশনে অংশগ্রহণ: ৩,৫০০+ জন
• প্যানেলিস্ট: ১৩০ জন
• দ্বিপাক্ষিক বৈঠক: ১৫০টি
• সাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক (MoU): ৬টি (তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পে)
• ঘোষিত বিনিয়োগ: শপআপ ও হান্ডা গ্রুপ মিলিয়ে প্রায় ৩,১০০ কোটি টাকা
• সরকারি খরচ: ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা
• অতিরিক্ত অনুদান: ৩.৫ কোটি টাকা (সহযোগী প্রতিষ্ঠান থেকে)
গুণগত দিক থেকে অর্জন:
১. বিদেশিদের দৃষ্টিভঙ্গি ও ধারণার পরিবর্তন:
সামিটে এসে বিদেশিরা বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে কাছ থেকে দেখেছেন। বাংলাদেশের সম্পর্কে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রচলিত অনেক নেতিবাচক ধারণা সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যমে ভাঙতে পেরেছে আয়োজকরা। “Doing Business Index”-এর পুরাতন ও ভুল তথ্যের জায়গায় বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে।
২. দেশীয় আত্মবিশ্বাসের উন্মেষ:
‘The Audacity of Hope’ বইয়ের কথা উল্লেখ করে আয়োজকরা বলেন, দেশের মানুষকে একটু সুযোগ ও পজিটিভ শক্তি দিলে তারাই দেশ গড়ার প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে। সামিটের উদ্দেশ্য ছিল সেই আত্মবিশ্বাস জাগানো এবং দেশের উন্নয়নযাত্রায় সবাইকে সম্পৃক্ত করা।
তিনধাপে সামিট পরিকল্পনা:
• ৭-৮ এপ্রিল: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ইপিজেড ও অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরিয়ে দেখানো হয়। স্টার্টআপদের জন্য আলাদা সেশন ছিল।
• ৯ এপ্রিল সকাল: সরকার ও বিভিন্ন পক্ষের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
• ৯-১০ এপ্রিল: ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, মিডিয়া ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সরাসরি নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা:
আয়োজকরা আশাবাদী, প্রতি বছর এমন একটি আন্তর্জাতিক মানের সামিট আয়োজন করা উচিত। তারা বিশ্বাস করেন, যেভাবে সাড়া পাওয়া গেছে তা আগামী দিনের বিনিয়োগ পরিবেশকে আরও সমৃদ্ধ করবে। সামিটের মাধ্যমে গড়ে ওঠা সম্ভাব্য বিনিয়োগের পাইপলাইনটি ট্র্যাক করা হবে এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সহায়তা দেওয়া হবে।