
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সতর্ক করেছেন যে, ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ যদি কিয়েভ এবং তার আন্তর্জাতিক মিত্ররা রাশিয়ার অগ্রযাত্রা রুখে না দাঁড়ায়, তাহলে এই সংঘাত বিশ্বযুদ্ধে পরিণত হতে পারে।
রবিবার প্রচারিত CBS-এর জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘60 Minutes’-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, “এই যুদ্ধ শুধু ইউক্রেনের জন্য নয়, সমগ্র বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমরা যদি দৃঢ়ভাবে রুখে না দাঁড়াই, তাহলে (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট) পুতিন আরও এগিয়ে যাবে। এটি নিছক অনুমান নয়। তার লক্ষ্য হচ্ছে রাশিয়ান সাম্রাজ্য পুনরুজ্জীবিত করা এবং এমন ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করা যা বর্তমানে ন্যাটোর সুরক্ষার আওতাভুক্ত।”
জেলেনস্কি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোর সদস্য হওয়ায় যেকোনো সম্ভাব্য সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে পড়বে। এই বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে বলছি, এটি বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিতে পারে।”
যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গে, তিনি বলেন, “যেকোনো যুদ্ধবিরতিতে আমাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা থাকতে হবে। আমাদের জন্য ‘ন্যায়সঙ্গত শান্তি’ মানে হলো—আমাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারা।”
তিনি আবারও স্পষ্ট করে দেন, ইউক্রেন রাশিয়ার দখলে থাকা কোনো ভূখণ্ডকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে না। বরং সেগুলো ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে ফিরিয়ে আনবে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে, জেলেনস্কি বলেন, “আমি অনেকবার ট্রাম্পকে বলেছি—পুতিনকে বিশ্বাস করা যায় না। আগের যুদ্ধবিরতিগুলো ব্যর্থ হয়েছে, কারণ পুতিনের আসল উদ্দেশ্যই হচ্ছে এই যুদ্ধ শেষ না করা।”
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার বিনিময়ে আমেরিকানরা কী পেয়েছে?—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে ধন্যবাদ জানাতে পারি। তারা আমাদের যে সহায়তা করেছে, তা অনেক শক্তিশালী। তবে, যারা মারা যাচ্ছে—সম্মানের সঙ্গে বলছি—তারা ইউক্রেনিয়ান। তাই আমরা যখন অস্ত্র পাই, তখন সেটি শুধু আমাদের নয়, অন্য দেশগুলোর জনগণকেও রক্ষা করে।”
জেলেনস্কি জানান, তিনি ট্রাম্পকে ইউক্রেনে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। “খুশি হয়ে আমি ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানাবো। তিনি যেন আসেন এবং আমাদের বাস্তব অবস্থা দেখেন। এটা কোনো থিয়েটার হবে না, রাস্তায় সাজানো অভিনেতা থাকবে না। আমরা এমন করি না, আমাদের তা প্রয়োজন নেই। আপনি যেকোনো শহরে যেতে পারেন, যেগুলো আগ্রাসনের শিকার হয়েছে। আমি শুধু এটুকুই বলেছি, আসুন এবং বুঝুন,” বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।