
ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস ঘোষণা দিয়েছে, যদি গাজা যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়, তবে তারা সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত। কায়রোতে মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় চলছে এই আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ পর্ব।
হামাসের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক কর্মকর্তা তাহের আল-নুনু বলেন, “আমরা প্রস্তুত আছি সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য—বিনিময়ে চাই একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ বন্দি বিনিময় চুক্তি’, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশের নিশ্চয়তা।”
তবে তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল চুক্তির বাস্তবায়ন ব্যাহত করছে এবং যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে শান্তিচেষ্টা ভঙ্গ করছে।
নুনু আরও বলেন, “এখানে সংখ্যার বিষয় নয়। মূল বিষয় হলো, দখলদার শক্তি (ইসরায়েল) তার প্রতিশ্রুতি থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। তাই হামাস স্পষ্টভাবে বলছে, যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক গ্যারান্টি প্রয়োজন।”
নতুন প্রস্তাবনা ও আলোচনার অগ্রগতি
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম Ynet জানায়, নতুন একটি প্রস্তাব হামাসের সামনে পেশ করা হয়েছে। এর অধীনে, হামাস ১০ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেবে, এবং যুক্তরাষ্ট্র গ্যারান্টি দেবে যে ইসরায়েল পরবর্তী পর্বে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করবে।
গত ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি দুই মাস স্থায়ী হয়, যার মধ্যে একাধিক জিম্মি-বন্দি বিনিময় হয়। তবে সেটি মার্চ ১৮-এ ভেঙে পড়ে। তারপর থেকে নতুন সমঝোতার প্রচেষ্টা চলছে।
‘অস্ত্রসমর্পণ নয়’ – হামাসের সাফ বার্তা
হামাস একাধিকবার জানিয়েছে, তারা নিজেদের অস্ত্র পরিত্যাগ করবে না। তাহের নুনু বলেন, “প্রতিরোধ বাহিনীর অস্ত্র কোনো আলোচনার বিষয় নয়।”
যুদ্ধের পটভূমি ও মানবিক বিপর্যয়
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার মধ্য দিয়ে গাজা যুদ্ধের সূচনা হয়। এতে ইসরায়েলের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ১,২১৮ জন নিহত হয়—অধিকাংশই বেসামরিক। হামাস ২৫১ জনকে জিম্মি করে, যাদের মধ্যে এখনও ৫৮ জন গাজায় রয়েছে, যার মধ্যে ৩৪ জনকে ইসরায়েল মৃত বলে দাবি করছে।
অন্যদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে গত ১৮ মার্চ পর্যন্ত ১,৫৭৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, ফলে গাজা যুদ্ধের মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০,৯৪৪ জনে।
সূত্র: আল জাজিরা, এএফপি, হামাস ও ইসরায়েলি সরকারি তথ্য