
গাজার ভয়াবহ মানবিক সংকটে সবচেয়ে বেশি ভুগছে নারীরা ও কিশোরীরা। তারা তিনগুণ কষ্টের মুখোমুখি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (UNFPA) আরব অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক লায়লা বেকার।
মিশরের কায়রো থেকে আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লায়লা বেকার বলেন, “এই নারীরা তাদের নিজস্ব স্বাস্থ্যগত সমস্যার সঙ্গে লড়ছে, কারণ গাজার অধিকাংশ হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্র কার্যত অচল হয়ে গেছে। ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর সরবরাহ বন্ধ, ফলে তারা নানাভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে আছে। একই সঙ্গে তাদের পরিবারগুলোর দেখভাল করার দায়িত্বও তাদের কাঁধে, যা তাদের নিজেদের স্বাস্থ্যের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।”
তিনি আরও জানান, গর্ভবতী নারীরা চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। নিরাপদভাবে কোনো চিকিৎসাকেন্দ্রে যাওয়া তাদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লায়লা বলেন, “যদি ধরেও নেই তারা কোনোভাবে চিকিৎসাকেন্দ্রে পৌঁছাতে পারলো, সেখানে কি পেশাদার চিকিৎসক থাকবে? প্রয়োজনীয় ওষুধ থাকবে? কিংবা ফিরে আসার মতো নিরাপদ পথ থাকবে? আর সেই নবজাতক শিশু কি আদৌ বাঁচবে এই ভয়াবহ পরিবেশে, যেখানে খাবার, পানি, আশ্রয় — সবই সীমিত?”
এমন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও গাজার নারী ও কিশোরীদের মানসিক দৃঢ়তা ও সাহসকে সম্মান জানিয়ে তিনি বলেন, “তাদের মধ্যে এক ধরনের অবিচল অঙ্গীকার রয়েছে। তারা নিজেদের পরিচয়, দেশ এবং মাতৃভূমির প্রতি গর্বিত। তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ — এই ভূমি ছাড়বেন না, শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন।”
গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ে আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা। নারীদের জন্য জরুরি চিকিৎসা সহায়তা, নিরাপদ আশ্রয় এবং খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।
এই সংকটময় মুহূর্তে গাজার নারীদের কণ্ঠ যেন বিশ্ববাসীর বিবেক নাড়া দেয় — এমনটাই প্রত্যাশা করছেন মানবাধিকারকর্মীরা