
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে গঠিত “গোল্ডেন ডোম” ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা প্রকল্পে নেতৃত্ব দেওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে ইলন মাস্কের স্পেসএক্স। এ প্রকল্পে স্পেসএক্স-এর সঙ্গে অংশীদার হয়েছে ট্রাম্পপন্থী দুটি প্রযুক্তি সংস্থা—পালান্টির এবং অ্যান্ডুরিল।
প্রকল্পটির আওতায় পৃথিবীর কক্ষপথে ৪০০ থেকে ১০০০ স্যাটেলাইট স্থাপন করে ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত ও ট্র্যাক করার পরিকল্পনা রয়েছে, বলে জানিয়েছে ছয়টি নির্ভরযোগ্য সূত্র। এ ছাড়াও ২০০ অস্ত্রযুক্ত স্যাটেলাইট দিয়ে শত্রু ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসের প্রস্তাবও রয়েছে, যদিও স্পেসএক্স অস্ত্রায়নের দায়িত্বে থাকবে না।
ট্রাম্প তার ২৭ জানুয়ারির নির্বাহী আদেশে এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা প্রকল্পকে ‘মার্কিন জাতির জন্য সবচেয়ে বিপর্যয়কর হুমকি প্রতিরোধের ব্যবস্থা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মাস্ক বর্তমানে “ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি”-এর বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, এবং ট্রাম্পের প্রচারণায় তিনি ২৫০ কোটি ডলারেরও বেশি অনুদান দিয়েছেন।
সূত্র জানায়, স্পেসএক্স এবং এর সহযোগীরা প্রতিরক্ষা দপ্তরের কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন সাবস্ক্রিপশন-ভিত্তিক মডেলে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যবস্থা রাখতে। অর্থাৎ, সরকার সরাসরি মালিক না হয়ে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে সেবা নেবে। যদিও এই মডেল দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব করতে পারে, তবুও এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে সরকার প্রযুক্তি ও মূল্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারে বলে কিছু কর্মকর্তার আশঙ্কা।
পেন্টাগনের উপ-প্রধান স্টিভ ফেইনবার্গ প্রকল্প নির্বাচনে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন। ইতোমধ্যে স্পেসএক্স নিজস্ব ফ্যালকন-৯ রকেট এবং পুরোনো স্যাটেলাইট ব্যবহার করে প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, কেবল “custody layer” অংশটির নকশা ও প্রকৌশল ব্যয়ই ৬ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।
তবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি সত্ত্বেও বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সম্পূর্ণ কার্যকর একটি নতুন সিস্টেম কতটা সফলভাবে তৈরি করা সম্ভব, তা এখনও প্রশ্নবিদ্ধ। এই প্রকল্পে স্পেসএক্স বিজয়ী হলে, তা হবে সিলিকন ভ্যালির জন্য এক ঐতিহাসিক জয় এবং ঐতিহ্যবাহী প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলোর জন্য বড় ধাক্কা।
এখন পর্যন্ত লকহিড মার্টিন, নর্থরপ গ্রুম্যান ও বোয়িংসহ ১৮০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান এই প্রকল্পে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আগামী ২০২৬ সাল থেকে ২০৩০-এর মধ্যে ধাপে ধাপে প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।