
আফগানিস্তানে ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলকারী তালেবান গোষ্ঠীর ওপর ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ২০ বছরের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেছে রাশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রুশ সংবাদ সংস্থা তাস-এর বরাতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
রাশিয়ার সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ওলেগ নেফেদভ জানান, দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর থেকে আসা একটি অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এই নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করা হয়েছে, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
তালেবানকে ‘মিত্র’ বলছে মস্কো
২০২১ সালে কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই তালেবানের সঙ্গে ধীরে ধীরে সম্পর্ক উন্নয়নের পথে হাঁটছে মস্কো। এর আগেও তালেবান প্রতিনিধিদের রাশিয়ায় বিভিন্ন বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত বছর তালেবানকে “সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে মিত্র” হিসেবে উল্লেখ করেন। কাবুলে তার বিশেষ দূত তখন জানান, তালেবানকে নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
গ্যাস রপ্তানি ও ভূরাজনৈতিক স্বার্থে ঘনিষ্ঠতা
মস্কো তালেবান-শাসিত আফগানিস্তানকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় গ্যাস রপ্তানির একটি ট্রানজিট হাব হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ গত বছর বলেছিলেন, “আফগানিস্তানের সঙ্গে রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের পথে রাশিয়া অটল থাকবে।”
আঞ্চলিক দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন
তালেবান নারীদের শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞা ও চলাফেরার স্বাধীনতা সীমিত করলেও, মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশই তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করছে।
২০২৩ সালে কাজাখস্তান তালেবানকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ তালিকা থেকে বাদ দেয়, পরে কিরগিজস্তানও একই পদক্ষেপ নেয়। বর্তমানে চীন, ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং ইরানের কাবুলে দূতাবাস রয়েছে।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, তালেবান ক্ষমতায় আসার পর চীনই প্রথম দেশ হিসেবে ২০২৩ সালে আফগানিস্তানে পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেয়।