
সিঙ্গাপুরের শাংরি-লা হোটেলে এ সপ্তাহান্তে অনুষ্ঠিত এশিয়ার শীর্ষ নিরাপত্তা সম্মেলন শাংরি-লা ডায়ালগ-এ বহু সামরিক কর্মকর্তা অংশ নিলেও একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জুন এবার সম্মেলনে অংশ নেননি। তার পরিবর্তে বেইজিং নিম্নপদস্থ প্রতিনিধিদের একটি দল পাঠিয়েছে। ২০১৯ সালের পর এই প্রথমবার চীন তার প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে এই উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে পাঠায়নি, যদি না ধরা হয় ২০২০ ও ২০২১ সালে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে যখন অনুষ্ঠানটি বাতিল হয়েছিল। ফলে তার মার্কিন সমকক্ষ প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথের সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাতের সুযোগ হয়নি। এই সুযোগে হেগসেথ শনিবার সম্মেলনের মঞ্চে এককভাবে বক্তব্য দিয়ে চীনের সামরিক হুমকিকে “সম্ভাব্যভাবে আসন্ন” বলে চিহ্নিত করেন।
তিনি বলেন, “সবাইকে স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে যে বেইজিং আন্তঃপ্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ক্ষমতার ভারসাম্য বদলাতে সামরিক শক্তি ব্যবহারের জন্য বাস্তব প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
তাইওয়ানকে ঘিরে নিয়মিত সামরিক মহড়া ও দক্ষিণ চীন সাগরে ক্রমবর্ধমান সামরিক সংঘর্ষের উদাহরণ টেনে হেগসেথ বলেন, “চীন তার প্রতিবেশীদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে হয়রানি করছে।”
“এটা লুকানোর কিছু নেই। চীনের হুমকি বাস্তব, এবং তা খুব শীঘ্রই ঘটতেও পারে,” বলেন তিনি।
চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক আগ্রাসনের কথা তুলে ধরে হেগসেথ এশীয় দেশগুলোকে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন ভূ’রাজনীতিতে চীনের আগ্রাসন ঠেকাতে এশিয় দেশগুলোর পাশে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ,এরপর তিনি উদাহরণ হিসেবে জার্মানিকে উল্লেখ করেন, যারা জিডিপির ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করার ঘোষণা দিয়েছে।
তিনি বলেন, “যখন ইউরোপের দেশগুলো প্রতিরক্ষায় এতটা ব্যয় করতে প্রস্তুত, তখন এশিয়ার মিত্ররা আরও ভয়াবহ হুমকির মুখে থেকেও কম ব্যয় করলে তা যৌক্তিক নয়।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তার কিছু ঘনিষ্ঠ মিত্রদের ওপর শুল্ক আরোপ করায় সম্পর্ক কিছুটা টানাপোড়েনের মধ্যে গেলেও হেগসেথ আশ্বস্ত করেন যে ওয়াশিংটন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, “আমেরিকা গর্বের সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ফিরে এসেছে, এবং আমরা এখানে স্থায়ীভাবে আছি।”