
গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর স্থল অভিযান যতই গভীরে প্রবেশ করছে, ততই জটিল হয়ে উঠছে যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তবতা। দুই দিনের ব্যবধানে চারজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার খবর সামনে এসেছে, যা ইসরায়েলের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতাদের জন্য নতুন চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আজ বুধবার সকালে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, গাজায় চলমান সংঘর্ষে আরও এক সেনা নিহত হয়েছে। এর এক দিন আগেই তিনজন সেনা নিহত হয়েছিল। ফলে মোট নিহত সেনার সংখ্যা দুই দিনে দাঁড়ালো চারজন।
এই পরিস্থিতি এমন সময়ে দেখা দিচ্ছে, যখন ইসরায়েল হামাসের ওপর চাপ বৃদ্ধি করে যাচ্ছে যাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আলোচিত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করে। মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাব অনুসারে, একটি ৬০ দিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তবে হামাস জানিয়েছে, তারা এমন একটি যুদ্ধবিরতি চায় যার গ্যারান্টি থাকবে দীর্ঘমেয়াদি শান্তির, শুধু ৬০ দিনের জন্য নয়। সংগঠনটি আশঙ্কা করছে, সাময়িক যুদ্ধবিরতির পর পুনরায় হামলা শুরু হতে পারে, যা তাদের অবস্থানকে আরও দুর্বল করে দেবে।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলি অভিযান যত গভীরে যাচ্ছে, ততই তাদের সেনাবাহিনী প্রতিরোধের মুখে পড়ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। একের পর এক সেনা নিহত হওয়া যুদ্ধের গতিপথ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, এবং ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠছে।
এর মধ্যেই গাজায় একটি স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলার শিকার হয়ে অন্তত ১৮ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। নিহতদের মধ্যে শিশু ও নারী রয়েছেন। ইসরায়েল বলছে, ওই স্কুল ভবনটি হামাসের একটি ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল, যদিও এই দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
এছাড়াও গাজায় বন্দী থাকা ব্যক্তিদের জীবন আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যুদ্ধ যত গভীরে যাচ্ছে, বন্দীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগও তত বাড়ছে। ইসরায়েলি সেনাদের অগ্রগতির কারণে হামাসের প্রতিরোধ তীব্র হচ্ছে, এবং এতে বন্দী বিনিময় বা উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।
এই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কার্যকর হবে কিনা তা এখনো অনিশ্চিত, তবে ততক্ষণ পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় প্রাণহানির মিছিল চলতেই থাকবে — যার শেষ কোথায়, তা কেউ জানে না।