গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুর নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত একটি পোশাক কারখানায় মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কারখানার ছাদ থেকে পড়ে মো. জাকির হোসেন (৩০) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। বিষয়টি কেন্দ্র করে সকাল থেকেই সহকর্মী শ্রমিকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৯টার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করলেও কিছুক্ষণ পর পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কারখানার চত্বর ঘিরে ফেলে।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, কোনো পূর্বসতর্কতা ছাড়াই তাদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়, যার ফলে অনেক শ্রমিক আহত হন। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন আন্দোলনরত শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে কিছু ভাঙচুরের চেষ্টা করেন এবং একটি পুলিশের এপিসি (আর্মড পারসোনেল ক্যারিয়ার) গাড়িতে আঘাত করেন।
নিহত জাকির হোসেন নেত্রকোনার বারহাট্রা উপজেলার বাদেচিরাম গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। সহকর্মীদের দাবি, ছুটি চাইতে গিয়ে কর্তৃপক্ষের দুর্ব্যবহারের শিকার হয়ে তিনি মানসিক চাপে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েন। গুরুতর অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কারখানার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) জুবায়ের বাসার বলেন, “জাকির ছুটি নিতে আসেননি, বরং তার পারিবারিক সমস্যার কারণে মানসিক চাপে ছিলেন। আমরা যতটুকু জেনেছি, এটি আত্মহত্যার ঘটনা।”
শিল্প পুলিশের শ্রীপুর সাবজোন ইনচার্জ মো. আব্দুল লতিফ বলেন, “শ্রমিকরা আমাদের একটি এপিসি গাড়ি ভাঙচুর করে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে তাদের ছত্রভঙ্গ করি।”
