
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কলোরাডোর বোল্ডারে রবিবারের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার জন্য “বাইডেনের হাস্যকর ওপেন বর্ডার নীতিকে” দায়ী করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অভিযুক্ত মোহাম্মদ সাবরি সোলাইমানকে অবশ্যই “TRUMP নীতির অধীনে” দেশ থেকে বের করে দেওয়া উচিত।
প্রথম প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প লিখেছেন,
“গতকালের কলোরাডোর বোল্ডারে ভয়াবহ হামলা যুক্তরাষ্ট্রে কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। সে বাইডেনের হাস্যকর ওপেন বর্ডার নীতির মাধ্যমে দেশে ঢুকেছিল, যা আমাদের দেশকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তাকে অবশ্যই TRUMP নীতির অধীনে বহিষ্কার করতে হবে।”
হামলার ঘটনায় আটজন আহত হয়েছেন। সন্দেহভাজন সোলাইমান (বয়স ৪৫) ২০২২ সালের আগস্টে একটি ট্যুরিস্ট ভিসায় মিশর থেকে আমেরিকায় আসেন। এই ভিসা তাকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি দেয়। পরে তিনি কাজের অনুমতির জন্য আবেদন করেন, যা তাকে ২০২৫ সালের ২৮ মার্চ পর্যন্ত বৈধ অবস্থান নিশ্চিত করে। তবে এর পরবর্তী দুই মাস তিনি অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন।
একটি ফেডারেল অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সোলাইমান “Run For Their Lives” নামের একটি সংগঠনের সদস্যদের ওপর দুইটি হাতে বানানো মলোটোভ ককটেল ছুঁড়ে মারেন। ঐ সংগঠনের সদস্যরা — যাদের অনেকেই প্রবীণ
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সোলাইমান “ফ্রি প্যালেস্টাইন!” বলে চিৎকার করতে করতে বিস্ফোরকগুলো নিক্ষেপ করেন। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি একটি কালো প্লাস্টিকের কন্টেইনারে আরও ১৪টি মলোটোভ ককটেল পাওয়া গেছে।
ফেডারেল কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে সোলাইমান বলেন, “আমি সব জায়নিস্ট লোকদের হত্যা করতে চেয়েছিলাম এবং চাই তারা সবাই মরে যাক।”
তিনি আরও জানান, ইউটিউবে মলোটোভ ককটেল বানানোর পদ্ধতি দেখে তিনি গত এক বছর ধরে এই হামলার পরিকল্পনা করছিলেন। তবে মেয়ের গ্র্যাজুয়েশন শেষ হওয়া পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করেছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সোলাইমান কলোরাডো স্প্রিংসে তার স্ত্রী এবং পাঁচ সন্তান নিয়ে বসবাস করছিলেন। হামলার সময় তিনি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যেখানে তাকে শার্টবিহীন অবস্থায় হাতে বিস্ফোরক নিয়ে হাঁটতে দেখা যায়।
ফেডারেলরা জানিয়েছেন, সেই ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, “কত শিশুকে হত্যা করা হয়েছে” এবং “জায়নিস্টদের শেষ করো।” হামলায় আহত আটজনের মধ্যে চারজন পুরুষ ও চারজন নারী, যাদের বয়স ৫২ থেকে ৮৮ বছরের মধ্যে।
সোলাইমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং সোমবার তার বিরুদ্ধে ফেডারেল হেইট ক্রাইম বা ঘৃণাজনিত অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রাজ্য পর্যায়ে প্রথম-ডিগ্রি হত্যাচেষ্টাসহ একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন,
“সন্ত্রাসবাদের যেকোনো ঘটনা আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হবে।”
“এই ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করে যে আমাদের সীমান্তকে অবশ্যই নিরাপদ রাখতে হবে এবং অবৈধ, আমেরিকা-বিরোধী উগ্রবাদীদের আমাদের মাতৃভূমি থেকে বহিষ্কার করতে হবে। এই ভয়াবহ ঘটনার শিকারদের এবং বোল্ডার, কলোরাডোর মহান জনগণের প্রতি আমার হৃদয় সমবেদনায় ভরে গেছে।”
ট্রাম্পের সীমান্ত নীতি মূলত অবৈধ অপরাধীদের বহিষ্কারের উপর জোর দেয়। তবে তার শীর্ষ অভিবাসন নীতিনির্মাতা স্টিফেন মিলার ইঙ্গিত দিয়েছেন, গ্রেপ্তারের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।
এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় মিলার এক্স-এ লেখেন,
“আত্মঘাতী অভিবাসন নীতিকে পুরোপুরি বিপরীতমুখী করতে হবে।”