
সংসদের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সোমবার আস্থা ভোটে পরাজিত হওয়ার পর মঙ্গলবার ওইউন-এর্ডেনে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের বিলাসবহুল জীবনযাত্রা নিয়ে জনমনে ক্ষোভ দানা বাঁধে, যা রাজধানী উলানবাটরে টানা প্রতিবাদের রূপ নেয়।
ভোট ফলাফল ঘোষণার পর পার্লামেন্টে তিনি বলেন, “মহামারি, যুদ্ধ ও শুল্কের সময়ে আমার দেশ ও জনগণের সেবা করতে পারা ছিল এক সম্মানের বিষয়।”
চার বছরেরও বেশি সময় ধরে দায়িত্বে থাকা ওইউন-এর্ডেনে তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেন। ভোটের আগে সংসদে দেয়া এক ভাষণে তিনি অভিযোগ করেন, “দৃশ্যমান ও অদৃশ্য বড় স্বার্থগোষ্ঠী” একটি “সংগঠিত ষড়যন্ত্র” করে সরকার পতনের চেষ্টা চালিয়েছে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, তাকে সরিয়ে দিলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। তবে তার এই হুঁশিয়ারি সংসদকে প্রভাবিত করতে ব্যর্থ হয়। মাত্র ৪৪ জন আইনপ্রণেতা তার পক্ষে ভোট দেন, যেখানে বিপক্ষে ভোট পড়ে ৩৮টি।
১২৬ আসনের সংসদে আস্থা ভোটে টিকে থাকতে হলে ওইউন-এর্ডেনের দরকার ছিল ৬৪টি ভোট। তিনি জানুয়ারি ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী হন এবং জুলাই ২০২৪ সালে পুনর্নির্বাচিত হন। এখন তিনি তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। ৩০ দিনের মধ্যে একজন উত্তরসূরি নিয়োগ দিতে হবে।
উত্তর এশিয়ার স্থলবেষ্টিত গণতান্ত্রিক দেশ মঙ্গোলিয়া বহু বছর ধরে গভীর দুর্নীতিতে জর্জরিত। অনেকের অভিযোগ, কয়লা খনির দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের লাভ অভিজাত শ্রেণি নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিচ্ছে।
সোমবার শত শত তরুণ সংসদ ভবনের সামনের স্কয়ারে জড়ো হয়ে সাদা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং স্লোগান দেন: “পদত্যাগ তো সহজ!”
বিক্ষোভকারীদের অনেকেই জানান, তারা গভীরভাবে প্রোথিত দুর্নীতি ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতেই রাজপথে নেমেছেন।
ওইউন-এর্ডেনে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে মঙ্গোলিয়ার অবস্থান আরও অবনতি ঘটেছে।
অর্থনৈতিক সংকট ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিও জনঅসন্তোষ বাড়ানোর অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।