
সাবেক সিনেটর ও পশতুন জাতীয়তাবাদী নেতা আফ্রাসিয়াব খাটক বললেন—বেলুচ কর্মীদের স্বাধীনতা ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দমনে আইএসআইএস-কে ও পাকিস্তানের ‘ষড়যন্ত্রমূলক সম্পর্ক’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন এতে মানবাধিকার বিপন্ন হচ্ছে ।
দ্যা বেলুচিস্তান পোস্ট এর বরাতে তথ্য জানানো হয়েছে- সাবেক সিনেটর ও পশতুন জাতীয়তাবাদী নেতা আফ্রাসিয়াব খাটক পাকিস্তানে ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রদেশ (আইএসআইএস-কে)-এর ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বেলুচ সম্প্রদায় ও স্বাধীনতাপন্থী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে এই গোষ্ঠীর হুমকির প্রেক্ষিতে পাকিস্তান সরকারকে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ প্রকাশিত এক বার্তায় খাটক প্রশ্ন তোলেন, কেন পাকিস্তানি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আইএসআইএস-এর ক্রমবর্ধমান অপারেশনাল কর্মকাণ্ডের বিষয়ে নীরব? তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পাকিস্তানে বিদেশি জঙ্গিদের গ্রেপ্তার এবং তাদের সঙ্গে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সংযোগ থাকার অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছে। তিনি আরও জানান, আইএসআইএস প্রকাশ্যে বেলুচ লিবারেশন আর্মি এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।
আফ্রাসিয়াব খাটক সতর্ক করে বলেন, আইএসআইএস-কে-র উত্থান এই অঞ্চলে দুই দশক আগের আল-কায়েদার কর্মকাণ্ডের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনি পাকিস্তানের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানান। খাটকের এ বক্তব্য আসে আইএসআইএস-কে-র ২৫ মে প্রকাশিত এক বিবৃতির পর, যেখানে তারা দাবি করে যে, বেলুচ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বেলুচিস্তানের মাসতুন জেলায় তাদের ঘাঁটির ওপর হামলা চালিয়েছে। ওই বিবৃতির সঙ্গে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে আইএসআইএস-কে কেবল সশস্ত্র বেলুচ গোষ্ঠীগুলোকেই নয়, বরং মানবাধিকারকর্মী মহরাং বেলুচ, নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার, ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীদেরও হুমকি দেয়।
সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও আফগানিস্তানে বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদও এসব ঘটনার প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এখন মনে হচ্ছে আইএসআইএস-কে ও পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী বেলুচ জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, যা এই অঞ্চলের শক্তির ভারসাম্যে একটি বিপজ্জনক মোড়।
খলিলজাদ সতর্ক করে বলেন, বেলুচিস্তানে উগ্রপন্থী গোষ্ঠী ও রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর এই ক্রমবর্ধমান সংযুক্তি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে উঠতে পারে। TBP-এর তথ্য অনুযায়ী, আইএসআইএস-কে পুশতু ও ফারসি ভাষায় বার্তা দিয়ে তাদের সমর্থকদের প্রতি বেলুচ রাজনৈতিক ও জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে সহিংস কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বিশেষভাবে বেলুচ ইয়াকজেহতি কমিটির আয়োজিত প্রতিবাদ মিছিলে হামলা চালানোর আহ্বান জানিয়েছে।
এই হুমকিগুলোর বিরুদ্ধে বেলুচ রাজনৈতিক সংগঠন ও মানবাধিকারকর্মীরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা পাকিস্তান সরকারকে অভিযুক্ত করেছে যে, সরকার সচেতনভাবে উগ্রপন্থী সংগঠনগুলোকে ব্যবহার করে বৈধ রাজনৈতিক আন্দোলন ও নাগরিক অধিকার দাবিগুলো দমন করছে। TBP জানিয়েছে, একাধিক মানবাধিকার সংস্থা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পাকিস্তানের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং বেলুচিস্তানে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা রক্ষার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।