
প্যারিসের পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিসের কর্মীরা সোমবার (২ জুন) এক নাটকীয় প্রতিবাদে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মোমের মূর্তি প্যারিসের বিখ্যাত গ্রেভিন জাদুঘর থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে তা রাশিয়ার দূতাবাসের সামনে স্থাপন করেন। এই ব্যতিক্রমধর্মী কর্মসূচির মাধ্যমে তারা ফ্রান্সের পক্ষ থেকে রাশিয়ার সঙ্গে গ্যাস, পারমাণবিক শক্তি ও রাসায়নিক সারের মতো কৌশলগত খাতে চলমান বাণিজ্যের বিরোধিতা করেন।
গ্রিনপিস ফ্রান্স এক বিবৃতিতে জানায়, “আজ সকাল ১০:৩০ টায় আমাদের কর্মীরা গ্রেভিন জাদুঘর থেকে ম্যাক্রোঁর মূর্তি ‘ধার’ নিয়েছেন। কারণ আমরা মনে করি, যতক্ষণ না তিনি রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত চুক্তি বাতিল করছেন এবং ইউরোপীয় পর্যায়ে পরিবেশবান্ধব রূপান্তর শুরু করছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি এই বিশ্ববিখ্যাত জাদুঘরে প্রদর্শিত হওয়ার যোগ্য নন।”
সংগঠনটি অভিযোগ করে বলেছে, ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরও ফরাসি প্রেসিডেন্ট নানা সময় নিজেকে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন, অথচ বাস্তবে রাশিয়ার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ খাতে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রেখেছেন।
গ্রিনপিস আরও জানায়, “ম্যাক্রোঁ সরকারের নীতিতে দেখা যাচ্ছে এক ধরনের দ্বিমুখিতা। একদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের নিন্দা, অন্যদিকে রাশিয়ার কাছ থেকে গ্যাস, সার ও পারমাণবিক জ্বালানি আমদানি অব্যাহত রাখা — যা আসলে রুশ যুদ্ধযন্ত্রকে পরোক্ষভাবে মদদ দেওয়া।”
সংগঠনটি ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি fossil fuel বা জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে, রাশিয়ার পারমাণবিক জ্বালানির আমদানি বন্ধ করা এবং রাসায়নিক সারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানানো হয়েছে।
তবে গ্রিনপিস স্পষ্ট করেছে, “এই নিষেধাজ্ঞা যেন আরেকটি নির্ভরতা তৈরি করে অন্য কোনো দেশের ওপর — সেটা আমরা চাই না। আমাদের চাওয়া হলো, প্রকৃত অর্থেই টেকসই ও পরিবেশবান্ধব কৌশলে রূপান্তর।”
এই প্রতিবাদ প্যারিসের রাজনীতিক ও কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যদিও এ নিয়ে প্রেসিডেন্ট অফিস কিংবা গ্রেভিন জাদুঘর এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।