
মির্জাপুরে চালের বাজারে আগুন, সপ্তাহে বস্তায় বেড়েছে ১৫০ টাকা
মো. আবুসালেহ (সজীব) মির্জাপুর, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশেরই প্রধান খাদ্য হচ্ছে ভাত। প্রবাদে আছে” মাছে ভাতে বাঙালি “আর বাঙালির প্রধান খাদ্য হচ্ছে ভাত। আবার সেই ভাতের উৎস হচ্ছে চাল। আর সেই চাল এখন সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাহিরে।
রবিবার (২০ অক্টোবর) মির্জাপুর বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় চালের বাজারের অস্থিরতা। প্রতি কেজি চাল এখন ৬৫-৭২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একসপ্তাহ আগে যেখানে প্রতি কেজি চাল ৫৮- ৬৫ টাকা দরে বা ২৫ কেজি বস্তা (১৪৫০-১৪৮০) টাকায় বিক্রি হত।
সেখানে এখন (১৫৩০-১৬০০) টাকায় ২৫ কেজি চালের বস্তা বিক্রি হচ্ছে। এমনিতে সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তারমধ্যে চালের দাম বাড়ার কারণে নিম্ন আর ও মধ্যবিত্ত পরিবার এখন হিমশিম খাচ্ছে।
কয়েকজন রিকশাচালক কমল,আরজু,শরিফ,জসিম বলেন, কীসের দেশ স্বাধীন হল, এখন না আমাদের মরার দশা। ৬৫ টাকা কেজি চাল কিনা লাগে, ১৭৫ টাকা তেল কিনা লাগে, মাছ মাংস তো দূরের কথা শাক সবজিরও মেলা দাম আমরা কিনতে পারি না। এই সরকার এইসা কি করল আগের সরকারই না ভাল আছিল। এজন্য তারা সরকারকেই দায়ী করলেন। আগের সরকারের আমলে যা কামায় করতে পারতাম কোনোমতে সংসার চলত আর এহন যা কামায় করি চলতে পারি না।
জিনিসপত্রের দাম বাড়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আরেক পথচারী বয়স্ক মহিলা রহিমা বেগম স্বদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কোন সরকার বলে আইছে হেয় কমাতে পারে না। এত ছাত্ররা সরকার নামাইল এহন কনে গেল ওরা, ছাত্ররা না সবকিছুর দাম কমাবো? এমনে কইরা দাম বাড়ালে আমরা কেমনে বাঁচুম বলেন বাবাজি।
মির্জাপুর বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা মোঃ ইউসুফ মিয়া বলেন, চালের বাজার বাড়ার একটা লিমিট আছে এমন করে হঠাৎ করে বেড়ে যাবে আমরা ভাবতেই পারি নাই। তবে তিনি দাম বাড়ার ক্ষেত্রে মিল মালিকদের কে দায়ী করলেন।
নুরমোহাম্মদ, ভূইয়া ট্রেডার্স, জাহাঙ্গীর খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, মিলমালিক যদি আমাদের কম দামে চাল দেয় তাহলে আমরাও কমদামে ভোক্তাদের চাল দিতে পারব। এক্ষেত্রে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
মির্জাপুরের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী মোঃ জালাল উদ্দিন বলেন, চালের দাম আসলে অতটা বৃদ্ধি নয়।যে দামে ক্রয় করি তার থেকে প্রতি বস্তায় ১০-২০ টাকা লাভ করি। মাল মজুদ বা সিন্ডিকেটের কারণে চালের দাম বৃদ্ধি হয়েছে বলে জানতে চাইলে তিনি বলেন আসলে চালের বাজার সিন্ডিকেট নেই।
আসলে কৃষকের ঘরে এখন ধান মজুদ নেই যা আছে তার সর্বোচ্চ দাম পাচ্ছে কৃষক। এই দাম থাকলে ছোট মিল ব্যবসায়ীরা মিল বন্ধ করে দিবে। আমরা টাঙ্গাইল কালীহাতি, হামিদপুর থেকে চাল ক্রয় করে থাকি। সরকার যদি চালের উপর ভর্তুকি না দেয় এবং আমদানি না করে তাহলে এ বাজার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পরবে।
মির্জাপুরের ধান ব্যবসায়ী মোঃ সোহেল মিয়া বলেন, ধানের বাজার বর্তমানে একটু বেশী ১৫শ ২৫ -৩০ টাকা মণ ধান ক্রয় করলাম। লোড আনলোড ভাড়া দিয়ে কত টাকায় বিক্রি করব মিল মালিকের কাছে বলেন?
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলার ভোক্তা অধিকার দপ্তরের সহকারী পরিচালক শিকদার শাহিনুর আলমকে মুঠোফোনে একাধিক বার কল করেও তাকে ফোনে পাওয়া যায় নাই।