
ওয়াশিংটন (এপি): বুধবার বিকেলে যখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওভাল অফিস থেকে বেরিয়ে এলেন, তখন সূর্য ঝলমল করছিল এবং শেয়ার বাজার চূড়ান্ত উত্থানে ছিল। মাত্র দুই ঘণ্টা আগেই তিনি অনেক দেশের উপর আরোপ করা শুল্ক বৃদ্ধির পরিকল্পনা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন, কারণ বিশ্বব্যাপী আর্থিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।
ওয়াইওমিং-এর রিপাবলিকান সিনেটর জন ব্যারাসো ট্রাম্পকে বলেছিলেন, “আপনার প্রজ্ঞা এখন বাজারও বুঝে গেছে।”
ট্রাম্প সায় দেন, “এমনটা কেউ কখনও শোনেনি।”
এই অতিরঞ্জন এবার বাস্তবতা হয়ে উঠেছিল। প্রেসিডেন্ট নিজেই এমন এক পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছিলেন, যা বিশ্ব অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের কিনারায় নিয়ে গিয়েছিল। নতুন শুল্কের হুমকিতে শেয়ার বাজার ধসে পড়েছিল, কোম্পানিগুলো তাদের পরিকল্পনা বাতিল করেছিল, আর বিদেশি নেতারা নতুন বাস্তবতা মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
কিন্তু ঠিক এক সপ্তাহ পর হঠাৎ করেই ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়ে দেন, বেশিরভাগ শুল্কই তিনি প্রত্যাহার করছেন।
“আমি বলব, এর নাম নমনীয়তা,” বলেন ট্রাম্প, যিনি কয়েকদিন আগেই বলেছিলেন তিনি ‘কখনই পিছু হটবেন না’।
চুক্তিহীন আলোচনা আর অনিশ্চয়তা
এখনও পর্যন্ত কোনো নতুন বাণিজ্য চুক্তি হয়নি। তবে হোয়াইট হাউস জানায়, আলোচনা চলছে।
এই শুল্ক ঘূর্ণাবর্ত বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক আস্থা নষ্ট করেছে, মার্কিন নেতৃত্বের উপর প্রশ্ন তুলেছে, এবং এমনকি ট্রাম্প প্রশাসনের ভিতর দ্বন্দ্ব প্রকাশ করেছে। আমেরিকার সাধারণ বিনিয়োগকারী, অবসর ভাতা বা কলেজ ফান্ড যাঁদের উপর নির্ভর করেন, তারাও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
চীনের উপর ১২৫% পর্যন্ত শুল্ক আরোপের পর বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কানাডা ও মেক্সিকোর উপর ২৫% শুল্ক ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। অটোমোবাইল, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের উপরও একই হারে কর বসানো হয়েছে।
জাপান (২৪%), দক্ষিণ কোরিয়া (২৫%), ইউরোপীয় ইউনিয়ন (২০%) সহ আরও কিছু দেশের উপর শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে।
এপ্রিল ২ তারিখে হোয়াইট হাউসে ‘মুক্তি দিবস’ ঘোষণা করে ট্রাম্প বলেছিলেন, “আমার প্রিয় আমেরিকাবাসী, আজ মুক্তির দিন।” তাঁর হাতে ছিল একটি পোস্টার যেখানে দেশের ভিত্তিতে শুল্কের হার লেখা — থাইল্যান্ড ৩২%, কম্বোডিয়া ৪৯%, ভারত ২৬%।
এমনকি দক্ষিণ মহাসাগরের ‘হার্ড ও ম্যাকডোনাল্ড’ দ্বীপ, যেটি মূলত পেঙ্গুইনের বসতি, সেখানেও শুল্ক বসানো হয়েছিল।
তারপর ট্রাম্প ফ্লোরিডার একটি সৌদি অর্থায়নে আয়োজিত গল্ফ টুর্নামেন্টে যোগ দেন। আর সেখানেই ঘোষণা করেন, “আমি ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।”
(এপি):