
ইসরায়েল বারবার তার গাজায় হামলার আইনগত স্বীকৃতি দেয়ার চেষ্টা করেছে, তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী এই হামলাগুলি বৈধ নয়। গত ২৪ মার্চ ইসরায়েল উত্তর গাজায় একটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে আল জাজিরার সংবাদদাতা হোসাম শাবাতকে হত্যা করেছে। ২৩ বছর বয়সী এই সাংবাদিকসহ হাজারো নিরীহ মানুষকে ইসরায়েল গাজায় হত্যা করেছে, যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল।
আইনবিদদের মতে, ইসরায়েল “টার্গেটেড কিলিংস” বা সুনির্দিষ্ট হত্যাকাণ্ডের ধারণাটি ব্যবহার করছে, কিন্তু আন্তর্জাতিক আইনে এটি কোনো বৈধতা অর্জন করতে পারে না। ইসরায়েল বলছে যে এই হামলাগুলি হামাস বা অন্য যোদ্ধা সংগঠনের সদস্যদের বিরুদ্ধে, তবে শুধুমাত্র সদস্যপদ বা সন্দেহভাজন সম্পর্কের ভিত্তিতে কাউকে হত্যা করা আন্তর্জাতিক আইনে সঠিক নয়।
গাজার উপর ইসরায়েলের এই আক্রমণ সারা বিশ্বে চরম বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস অনুযায়ী, একমাত্র সেইসব ব্যক্তি যারা সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করছে, তাদেরই বৈধ লক্ষ্য হিসেবে ধরা হয়। এছাড়া, ইসরায়েল নিয়মিতভাবে আবাসিক এলাকা, স্কুল, হাসপাতাল এবং আশ্রয়কেন্দ্র লক্ষ্য করে আক্রমণ চালাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের আরও বড় লঙ্ঘন।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা হামলাগুলির সাফাই দিতে বলেন যে, তারা “ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধ” চালাচ্ছে। তবে, মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন যে, এ ধরনের আক্রমণের পেছনে যে আইনগত যুক্তি রয়েছে তা খুবই বিপজ্জনক এবং এটি আন্তর্জাতিক নীতির বিরোধী।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (ICC) এবং ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (ICJ) ইতিমধ্যে ইসরায়েলের এই হামলাগুলিকে যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং এমনকি গণহত্যার আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিহ্নিত করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েল এখন আন্তর্জাতিক আইনকে উপেক্ষা করে একেবারে অপারগতার সঙ্গে কাজ করছে এবং এভাবে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতিষ্ঠিত সিস্টেমকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা আরও মনে করছেন যে, বর্তমান পরিস্থিতি মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য একটি সংকটজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এখনই শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।