
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানানো প্রায় ১,০০০ জন বর্তমান ও সাবেক বিমানবাহিনীর রিজার্ভ সদস্যদের “চরমপন্থী ও প্রান্তিক” বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং তাদের বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর অফিস জানায়, প্রধানমন্ত্রী “প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং আইডিএফ প্রধানের বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন”।
বিতর্কিত চিঠি ও বরখাস্তের প্রক্রিয়া
সম্প্রতি এই পাইলটরা একটি খোলা চিঠিতে গাজা যুদ্ধের সমাপ্তি এবং বন্দিদের মুক্তির পক্ষে অবস্থান নেন। চিঠিতে বলা হয়, “শুধুমাত্র একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তিই বন্দিদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে পারে, কারণ সামরিক চাপ বরং তাদের মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায়। বর্তমানে এই যুদ্ধ কেবল রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, নিরাপত্তার জন্য নয়।”
ইসরায়েলি পত্রিকা Haaretz-এর তথ্য অনুযায়ী, চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে অনেকেই বর্তমানে সক্রিয় রিজার্ভ ডিউটিতে আছেন এবং তাদের মধ্যে রয়েছেন সিনিয়র অফিসার ও পাইলটরাও।
চিঠি ফাঁস হওয়ার পর ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর কমান্ডার টোমার বার স্বাক্ষরকারী সদস্যদের ফোন করে স্বাক্ষর প্রত্যাহার করতে বলেন এবং সতর্ক করেন, যারা প্রত্যাহার করবেন না, তাদের বরখাস্ত করা হবে।
Haaretz জানায়, এখন পর্যন্ত মাত্র ২৫ জন তাদের স্বাক্ষর প্রত্যাহার করেছেন, অপরদিকে আরও ৮ জন নতুনভাবে স্বাক্ষর করেছেন। পরবর্তীতে ইসরায়েলের সেনাপ্রধান আইয়াল জমির এবং বিমানবাহিনী প্রধান বার এই সদস্যদের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেন, যদিও এই সিদ্ধান্ত কবে কার্যকর হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
নেতানিয়াহুর বক্তব্য ও সমালোচনার ঝড়
নেতানিয়াহু বলেন, “যে সব বক্তব্য আমাদের সেনাবাহিনীকে দুর্বল করে এবং শত্রুদের সাহস জোগায়, তা ক্ষমার অযোগ্য। এরা সমাজকে ভাঙার চেষ্টা করছে, যা হামাস ৭ অক্টোবরের আগেই দুর্বলতার নিদর্শন হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিল।”
তবে সমালোচকরা বলছেন, নেতানিয়াহু ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছেন, যাতে তিনি তার সরকার টিকিয়ে রাখতে পারেন এবং প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকতে পারেন।
যুদ্ধের ভয়াবহ পরিসংখ্যান
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের চলমান হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০,৮৪৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,১৫,৭২৯ জন আহত হয়েছেন। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা হাজারো মানুষের ভাগ্য অজানা হওয়ায় প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ৬১,৭০০-এর বেশি হতে পারে।