
কাশ্মীরে বন্দুকযুদ্ধে ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা ও ৩ সন্দেহভাজন বিদ্রোহী নিহত ভারতের দাবি, পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীর থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিল বিদ্রোহীরা
কাশ্মীরের সম্পূর্ণ অধিকার দাবি করে ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই, যদিও শাসন করছে আংশিক অংশ
শ্রীনগর, ভারত: ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে দুটি পৃথক বন্দুকযুদ্ধে তিনজন সন্দেহভাজন বিদ্রোহী এবং একজন ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন বলে শনিবার জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
একটি সেনা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বুধবার দক্ষিণ কিশতওয়ার জেলার একটি জঙ্গল ঘেরা এলাকায় বিদ্রোহীদের উপস্থিতির তথ্যের ভিত্তিতে ভারতীয় সেনারা ওই এলাকাটি ঘিরে ফেলে।
তল্লাশির সময় বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় এবং বুধবার রাতেই একজন বিদ্রোহী নিহত হয় বলে জানানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, খারাপ আবহাওয়া সত্ত্বেও সেনারা এলাকায় তাদের অবস্থান বজায় রাখে এবং পরবর্তী গোলাগুলির মধ্যে শনিবার আরও দুই বিদ্রোহী নিহত হয়।
এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো হতাহতের খবর জানানো হয়নি।
তবে আরেকটি ঘটনায়, সেনাবাহিনী জানায় যে দক্ষিণ আখনূর এলাকায় শুক্রবার রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখার (LoC) কাছে একদল বিদ্রোহীকে বাধা দেওয়া হয়। এসময় সংঘর্ষে এক সেনা কর্মকর্তা নিহত হন।
সেনা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই বিদ্রোহীরা পাকিস্তান শাসিত আজাদ কাশ্মীর থেকে ভারতের দিকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিল।
তবে উল্লিখিত ঘটনাগুলোর কোনো স্বাধীন সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান কাশ্মীরের অংশবিশেষ শাসন করলেও, উভয় দেশই পুরো অঞ্চলটির উপর সার্বভৌম দাবি জানিয়ে আসছে।
১৯৮৯ সাল থেকে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বিদ্রোহীরা দিল্লির শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। অনেক মুসলিম কাশ্মীরি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য—কাশ্মীরকে পাকিস্তানের সঙ্গে একত্র করা বা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলাকে সমর্থন করে।
ভারত এই আন্দোলনকে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ হিসেবে আখ্যা দিলেও, পাকিস্তান সেই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং অনেক কাশ্মীরি একে একটি বৈধ স্বাধীনতা সংগ্রাম বলে মনে করেন।
এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক, বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছেন।
২০১৯ সালে ভারত কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিল করার পর অঞ্চলটিতে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। একই সঙ্গে সরকার কঠোরভাবে দমন-পীড়ন, নাগরিক অধিকার হ্রাস এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত করে দেয়, যার ফলে সেখানে আরও ঘন ঘন সামরিক অভিযান শুরু হয়।